পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/২৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RSSR আর্য্যাবর্ত্ত । ৩য় বর্ষ- ৩য় সংখ্যা । কিছু হইয়াছে, তাই বড় ব্যস্ত হইয়াছি। এবং আমার ব্যস্ততা যত বাড়িতেছে সেই পরিমাণে নিরাশ ও নিরুপায় হইতেছি। সেইজন্য আপনাকে এ সময়ে কাগজের এই দুঃখের সংবাদ লিখিলাম। আপনি ক্ষমা করিবেন।” এই পত্র পাইয়া যতীশ কিছু বিচলিত হইয়াছিল। বিচলিত হইবার কারণ একাধিক । প্রথমতঃ সে কাগজখানির ভবিষ্যৎ ভাবিয়া বিচলিত হইয়াছিল । এই পত্রেই সমাজে তাহার প্রতিভার পরিচয়, তাহার যশোর প্রতিষ্ঠা । ইহার যথেষ্ট সমাদর হইতেছে না কেন ? হায় বাঙ্গালী পাঠক ! বড় দুঃখেই কবি হেমচন্দ্র বলিয়াছেন “হায় মা ভারতী, চিরদিন তোর কেন এ কুখ্যাতি ভাবে, যোজন সেবিবে ও পদযুগল সেই সে দরিদ্র হ’বে ?” আরও এক কারণে সে কিছু বিচলিত হইয়াছিল। ইতঃপূর্বে অমূল্যচরণ, আপনার জন্য নহে- কাগজের জন্য, মধ্যে মধ্যে তাহার নিকট অর্থসাহায্য লইয়াছে। কিন্তু কখন একবারে অধিক অর্থ চাহে নাই । এবার প্রার্থিত সাহায্যের পরিমাণ দুই শত টাকা ! এত টাকা। একজন ছাত্রের পক্ষে কিছু অধিক। লোকচরিত্রজ্ঞানহীন যুবক জানিত না, অমূল্যচরণ বিশেষ চতুর ; সে সময় বুঝিয়া-সুবিধা বুঝিয়া অনুরোধ করিত। সে জানিত, যতীশচন্দ্রের পক্ষে অধিক অর্থ প্রদান এতদিন অসম্ভব ছিল-তাই সে পূর্বে কখনও একবারে অধিক অর্থ চাহে নাই। সে জানিত, এবার যৌতুক প্রভৃতিতে তাহার হস্তে কিছু অধিক অর্থ সঞ্চিত হইয়াছিল, তাই সে এবার এরূপ অনুরোধ করিয়াছে। যতীশচন্দ্র অমূল্যচরণের চরিত্রের স্বরূপ বুঝিতে পারে নাই। সে ক্ষমতা তাহার ছিল না। বিশেষ অমূল্যচরণ তাহার মনে এই ধারণা বদ্ধমূল করিয়া দিয়াছিল যে, সে তাহার অসাধারণ প্রতিভা বাঙ্গালা সাহিত্যের সেবায় নিযুক্ত করিয়া আত্মোৎসর্গের আদর্শ দেখাইয়াছে-সে যেন বিশ্বজিৎযজ্ঞের অনুষ্ঠান করিয়া আপনার সর্বস্ব দান করিয়াছে। তাহার উদেশ্যতাহার আদর্শে অনুপ্রাণিত হইয়া শতশত শিক্ষিত বাঙ্গালী যখন বাঙ্গালা সাহিত্যের সেবায় সকল শক্তি নিযুক্ত করিবে তখন বাঙ্গালা সাহিত্য সম্পদসম্ভারে সমগ্র সভ্য জগতে সমাদৃত হইবে। তখন সে মরণের শান্তিতে কর্ম্মক্লান্ত জীবনের শ্রান্তির পর সুপ্তি লাভ করিবে; কিন্তু সেই শুভদিনের কল্পনায় সে বর্তমা