পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/২৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 ‘আর্য্যাবর্ত্ত । ৩য় বর্ষ-৪র্থ সংখ্যা । কিছুক্ষণ চিন্তার পর সে বলিল, “আমরা, মহাশয়, গরীব লোক, এক করিতে আর করিয়া ফেলি । শেষে ‘ছা-বাচ্ছার’। অন্ন পর্য্যন্ত মারা যাইবে ?” আগন্তুক তাহাকে আশ্বাস দিলেন এবং প্রচুর পুরস্কারের প্রলোভন দেখাইয়া সম্মত করাইলেন । তখন সে নামিয়া ভঁাহাকে ধরিয়া গাড়িতে তুলিল এবং তামাক সাজিয়া বলিল, “দ্যাব তা, তামাক ইচ্ছে হোক।” ধূমপান করিয়া একটু সুস্থ হইয়া ভদ্রলোক সংক্ষেপে র্তাহার বৃত্তান্ত গাড়িয়ানকে বলিলেন। আজ তিনি দিনাজপুর হইতে যে গাড়িতে ফিরিতেছিলেন সেই যাত্রীপরিপূর্ণ গাড়ি মারা পড়িয়াছে। রেলওয়ের কর্ম্মচারীরা এখনই মৃত ও আহত লোক সব গাড়ি বোঝাই করিয়া লইয়া পদ্মায় ফেলিয়া দিবে। তিনি গড়াইতে গড়াইতে ঝোপের ভিতর দিয়া ভিতর দিয়া। এতদূর আসিয়া প্রাণ বাচাইয়াছেন । তঁহার দুইখানি পদ ভাঙ্গিয়া গিয়াছে, মাথায়ও চোট লাগিয়াছে। এই বলিয়া তিনি গাড়িয়ানের হাতে দশটি টাকা দিলেন ; বলিলেন, “বাবা, এখন তোমার হাতে আমার প্রাণ, যদি বঁচি তোমায় আমি আরও খুন্সী করিয়া দিব।” গাড়য়ান হাতে করিয়া টাকা কয়েকটি লইল, দুই একবার নাড়িল ; অহার পর ফিরাইয়া দিয়া বলিল, “তোমার টাকা রাখিয়া দাও, ঠাকুর মহাKSS BDD DDD D DDS DBD BB DDD BBBB MB DBD BBB সেই আমার লাভ। আমার ছেলেটা পুলেটা আছে, তুমি তাহদের আশীৰ্বাদ করিলে আমার ভাল হইবে ।” ভদ্রলোকের নিবাস মেদিনীপুর জিলায়, নাম রামশরণ চক্রবত্তী ; বয়স ৩৫ বৎসর, গঠন বলিষ্ঠ । তঁহার আকারপ্রকার দেখিলে সঙ্গতিহীন বলিয়া মনে হয় না। তিনি তঁাহার এক বিধবা আত্মীয়াকে লইয়া দিনাজপুর হইতে আসিতেছিলেন। ট্রেণে যখন দুর্ঘটনা ঘটে তখন তাহারা একত্র ছিলেন । তাহার পর কি কি ব্যাপার ঘটিয়াছে, তাহা তাহার স্মৃতির বহির্ভূত। শীতল নৈশ বায়ু যখন তাহার চৈতন্য সম্পাদন করিয়া দিল, তখন শারীরিক যন্ত্রণা অল্পক্ষণেই তঁহাকে তঁাহার সমস্ত অবস্থা বিশদ ভাবে বুঝাইয়া দিল। তিনি শুনিয়াছিলেন যে, এরূপ ক্ষেত্রে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষীয়গণ যাহাদের ক্রটীতে এই সকল দুর্ঘটনা ঘটে, তাহদের দায়িত্ব লঘু করিবার জন্য মৃত ও আহত লোকগুলিকে কোনও রকমে সরাইয়া ফেলে। সুতরাং আত্মরক্ষার.প্রবৃত্তি তঁহকে, দুৰ্বহ শারীরিক যন্ত্রণাকে উপেক্ষা করিয়া পলায়নের সামর্থ্য আনিয়া দিল ।