পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (তৃতীয় বর্ষ - প্রথম খণ্ড).pdf/২৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. २७० আর্য্যবর্ত্ত । ৩য় বর্ষ-৪র্থ সংখ্যা । কঁাদিবার অধিকার হইতেও তিনি বঞ্চিত। দুই হস্তে মুখ আবৃত করিয়া তিনি বৃক্ষের শিকড়ে মস্তক রক্ষা করিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে নিদ্রা তাহার অবশিষ্ট চৈতন্যটুকু হরণ করিল। তঁহার হৃদয়ের দাবদাহ। স্নিগ্ধ অশ্বখতিলে প্রশমিত হইল । - ؟- যখন রামশরণের নিদ্রািভঙ্গ হইল। তখন চতুর্দিক সুর্যকিরণে প্রদীপ্ত হইয়া উঠিয়াছে। পক্ষিকুলের কলরবে সে পল্পীপথ ধ্বনিত ; আদুরে স্রোতস্বিনীতাঁট হইতে স্নানার্থীর কলরব আসিতেছিল। তিনি চক্ষু মুছিলেন এবং সমস্ত অবস্থাটা ভাল করিয়া একবার বুবিয়া লইতে চেষ্টা করিলেন। এক এক কেরিয়া সমস্ত ঘটনাগুলি নবীন বর্ণচছটায় স্মৃতিপটে উদিত হইতে লাগিল । রামশরণ উঠিয়া দাড়াইলেন। কিন্তু পদ ত আর চলিতে চাহে না । হায় এই বিশাল ধারণীতে র্তাহার জন্য কি এতটুকু স্থান নাই, যথায় এই দীর্ণ দন্ধ হৃদয় শান্তিলাভ করিতে পারে । মনে পড়িল, মণিলালের সেই স্নিগ্ধ কুটীর, সেই পবিত্র সরলতা । তখন যদি মণিলালকে লইয়া কলিকাতায় না আসিয়া, একেবারে গৃহে আসি তাম, তাহা হইলে, তখন মরিয়াও শান্তি ছিল। আজ তাহা হইলে অদৃষ্টের এ নিষ্ঠুর কশাঘাত সহ্য করিতে হইত না। তখন আসি নাই জীবনের মমতায় । আসি নাই-সে কাহার দোষ ? আসিলে বোধ হয়। এমনটি হইত না । মণিলাল বলিয়াছিল, বাড়ীতে খবর পাঠাইতে-তাহাও কেন পাঠাই নাই ? হয় তা এই সকল কারণেই এই সর্বনাশ ঘটিয়াছে। তখন যদি একখানা চিঠি লিখিয়াও খবর লইতাম, তাহা হইলেও বুঝিাত, আমি বঁচিয়া আছি। কেন লিখি নাই ? এ বুদ্ধি তখন আমার কোথা হইতে আসিল ! হায় হায়, দোষ আমারই । চিন্তার স্রোত সেই রৌদ্রতপ্ত মধ্যাহ্নে কেমন করিয়া ফিরিল, তাই রামশরণ বুঝিতে পারিলেন না । ক্রমে ক্রমে ঘূণা ও বৈরাগ্যের পরিবর্তে তঁহার মন অনুশোচনায় পুর্ণ হইয়া গেল। তিনি ভাবিতে লাগিলেন, এ শোচনীয় পরিণাম তাহারই রচিত । পত্নীর ব্যবহার মনে হইলে যখন ঘূণায় ও ক্রোধে অধ্যর কুঞ্চিত হইতেছিল, তখনই অনুকম্প আসিয়া তাহার হৃদয়কে দ্রব করিয়া দিতেছিল। এমনই প্রতিকুল স্রোত র্তাহার জীর্ণ জীবনতরিখানিকে অস্থির করিয়া তুলিয়াছিল। তিনি ভাবিলেন, একটি নিরাশ্রয়া রমণী তাহার শিশু সন্তানটিকে লইয়া অকস্মাৎ এমন দুরবস্থায় পড়িলে কি না করিতে পারে ? সংসারের সঙ্গিহীন পিচ্ছিল পথে যদি তাহার পদস্বলন হয়, তবে