পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (দ্বিতীয় বর্ষ - দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ, ১৩১৮ । बैंौि-65द्धि । t8నీ গলে পরাইয়া দিয়া যাইত, সে দিন যাত্রীর দল অবাক হইয় তাহার দিকে চাহিয়া থাকিত। তাহদের মনে হইত যেন সে নগ্নপদে অসংখ্য নূপুর রুণু, রুণু করিয়া বাজিয়া উঠিতেছে, যেন সে গতির ছন্দে অসংখ্য কাব্য মুকুলিত হইয়া উঠিতেছে! তখন ফুলগন্ধে মন্দির আমোদিত হইত। আর দেবতার সহজ প্রফুল্লমুখ যেন আরও মধুর হাস্য বিকীরণ কিরিত। ভক্ত দ্বিগুণ প্রেমে মত্ত হইয়া জয়ধ্বনি করিয়া উঠিত। বৃদ্ধ পুরোহিত গদগদ ভাবে যুক্ত-করে কন্যার জন্য দেবতার করুণা ভিক্ষা করিতেন । ব্রাহ্মণবালা সদ্যোদ্ভিন্ন যৌবনকুসুমের মদিরায় বিভোর হইয়া থাকিত। পিতৃগৃহের নির্জনতার মধ্যেও তাহার রমণীসুলভ অশিক্ষিতাপটুতা আত্মবিকাশ করিতে ছাড়ে নাই। পুষ্পধন্বা তাহার চারুচাপ এই বালিকার দিকে ঈষৎ বাকাইতে ভুলেন নাই। সুতরাং ত্যাহার যৌবননদী প্রেমের চন্দ্রকিরণে উচ্ছলিত হইয়া উঠিতেছিল। সে সন্নিহিত বকুলবনে যাইয়া অপরাহ্নে ফুল কুড়াইয়া আনিত ; মালা গাঁথিয়া গাথিয়া কুন্তলে পরিত, কর্ণে পরিত, সীথিতে দোলাইত, আর তাহার পালঙ্কে উপাধানের উপর রাখিয়া দিত। সন্ধ্যায় মান করিয়া শুচিস্মিত হইয়া সে নীলবাসখানি সযত্নে ঘাঘরার মত করিয়া পরিত, দীপ জ্বলিত এবং শয্যার নিকটে গিয়া সেই দীপে কাহার আরতি করিত। চন্দনের ফোটা পরিয়া, বক্ষে কণ্ঠে চন্দনানুলেপন করিয়া সে দেবতাকে প্রণাম করিত। তাহার পর বালিকা পিতার আগমনের প্রতীক্ষায় বসিয়া থাকিত । ব্রাহ্মণ আসিয়া কন্যাকে দেখিয়া চমকিয়া উঠিতেন, তাহার পর তাহার কেশে হস্তার্পণ করিয়া আশীর্ব্বাদ করিতেন, মনে করিতেন, “বালিকার অবসরবিনোদনের ত আর কিছুই নাই, তাই সে বেশবিন্যাস করিয়া সময় কাটাইয়া দেয়।” বৃদ্ধের চক্ষু আৰ্দ্ধ হইয়া উঠিত। শ্রীমতীর আর একটি কাব্য ছিল-শয্যা রচনা । তাহার কক্ষটি সর্বদাই পরিষ্কৃত এবং কুসুম ও চন্দনের গন্ধে দেব-মন্দিরের ন্যায় আমোদিত থাকিত। শ্রীমতীর শয্যা বহুমূল্য না হইলেও পরিপাটী। প্রতিদিন অতি যত্নে সে তাহার শষ্যারচনা করিত, যেন প্রেমমুগ্ধ বালিকা পতির আগমনোদেশে সমস্ত শক্তি ও কল্পনা দিয়া তাহার বাসরসিজ, সাজাইয়া রাখিতেছে । তাহার মনোচোর আসিবে কি ? নিশীথে যখন পল্লী নিযুপ্ত, তখনও শ্রীমতী জাগিয়া থাকিত ; বকুলফুলের মালা, শেফালির মালা, রজনীগন্ধার মালা হাতে লইয়া সাশ্রনয়নে দেবতার নিকট প্রার্থনা করিত। জাগরণে যখন তাহার চক্ষু অলস হইয়া আসিত, অধীর প্রতীক্ষায় দেহ অবসন্ন হইয়া আসিত, তখন তাহার শরীর শয্যায় লুষ্ঠিত