পাতা:আর্য্যাবর্ত্ত (প্রথম বর্ষ).pdf/৪০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দোলনির সহিত নিজের কাল অঙ্গ দোলাইয়া গন্ধরাজ-বেল-মল্লিকা-শিরীষ-মালতীর মুখে মুখে পিক গাহিল-কুহু-কুহু-কুহু! সে স্বরে, সে গীতের উচ্চ মূৰ্ছনায় । আশাবধু সরম ত্যাগ করিয়া প্রতিধ্বনি তুলিয়া বলিল,-কুহু-কুহু-কুহু! সে কায়- ] হীন ভাষা, কণ্ঠাহীন স্বর ধীরে ধীরে হৃদয়ে গাঁথিয়া যায়। সে রহস্যময়ী লীলা । অপুর্ব ভঙ্গীতে ধারণীকে আমোদিত করিয়া তুলে ! বাঙ্গলায় বর্ষ ঝরিতে ঝরিতে, ভিজিতে ভিজিতে আসিয়া উপস্থিত । খাল বিল, পম্বল, পুষ্করিণী, নদী, নালা সবই ভরিয়া উঠিল। নূতন জলে ভেকের মকমকি প্রতিধ্বনিকে ক্লান্ত করিয়া তুলিলা ! নূতন জলে-ভরা নদী ভরা-যৌবনে বিধবা গৈরিক বাস পরিহিত রমণীর ন্যায় চলিতে লাগিল ! অত ভরা জলেও যেন কি এক অভাবের ক্রন্দন ব্যর ঝর রূবে জগতকে জানাইয়া গেল। তরু, লতা, পাতা সকলেই বর্ষাজলে ভিজিয়া সঙ্কুচিত হইয়া পড়িল । বাঙ্গলায় যেন কি এক ভরা সৌন্দর্য্যের ভরা গান গীত হইল ! তাহার পর শরতে বিমল সুনীল আকাশে চাদিনী রাত্রিতে বিকীর্ণ শ্বেত মেঘরাশির ক্ষুদ্র রাজ্যে অসংখ্য তারকালোকের মধ্যে রাকাশশী হাসিয়া উঠিল ! জ্যোৎস্নার উচ্ছাস্যময়ী লীলা লতায় পাতায়, তরুশিরে, কুসুমকোলে, শ্যামল কোমল দূর্ব্বা ক্ষেত্রের উপর, নদীর জলে, শ্যামল সৈকতে হাসিয়া হাসিয়া, ফুটিয়া লুটিয়া ভাসিয়া উঠিল। মাঠে মাঠে শ্যামলতা ফুটিল ; উপরে নৈশ নীলিমার নীচে অনন্ত শ্যামলতার উপর পূর্ণিমা রাকাপতির হাস্তস্রোত হিল্লোলিত হইয়া উঠিল! সে হিল্লোল প্রকাশের, সে আবেগ প্রকাশের, ভাষা নাই ;-তাহ “অনির্বাচনীয়-যেন আনন্দের অব্যক্ত আবেগ !” বর্ষার পর আর যেন নদী নীরধােৱ বহিতে পারে না। অমল শোভায় শ্যামল অঙ্গ ঝলসিয়া উঠিতেছে। আর মাঠে মাঠে ধান ধরে না ; কাননকুঞ্জে দোয়েলা-কোয়েলা কৃজন করিয়া উঠিতেছে! শ্যামল অঙ্গ শিশির-নিষিক্ত হইয়া-যেন আরও শ্যামল হইয়া উঠিয়াছে! হরিতে নীল আকাশ আসিয়া মিলিয়াছে ; সে মিলনে সৌন্দর্য্যের সৌন্দর্য্য বিকশিত হইয়া উঠিয়াছে ! তাখার পর সোণার হেমন্ত । মাঠে মাঠে সোণার ছড়াছড়ি-গড়াগড়ি ! শ্যামল শরতের আশাময়ী বাণী হেমন্তে কর্ম্মময়ী, প্রত্যক্ষরূপিণী । শ্যামল ধারণী । হিরন্ময়ী তরঙ্গায়িত হইতে লাগিল! সুদূর বিস্তৃত মাঠখানির প্রান্তে আকাশ আসিয়া মিলিয়াছে,-সোণার স্পর্শে সোণা হইয়া গিয়াছে। সোণার আকাশে। সোণার ক্ষেত্রে এক হইয়া গিয়াছে ! “স্থলে জলে আর গগনে গগনে? মধুর লগ্নে