পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ১৫ ]

আমার ছেলেপুলে নাই— কেবল দুই ভাগিনেয় আছে—মতিলাল স্বচ্ছন্দে থাকুক।

 বেচারাম বাবুর নাকি স্বরের কথা শুনিয়া মতিলাল খিল২ করিয়া হাসিতে লাগিল। অমনি বেণী বাবু উহুঁ২ করত চোক টিপ্তে লাগিলেন ও মনে করিলেন এমন ছেলে সঙ্গে থাকিলে কোথাও সুখ নাই। বেচারাম বাবু মতিলালের হাসি শুনিয়া বলিলেন—বেণী ভায়া! ছেলেটি কিছু বেদ্‌ড়া দেখতে পাই যে? বোধ হয় বালককালাবধি বিশেষ নাই পাইয়া থাকিবে। বেণী বাবু অতি অনুসন্ধনী—পূর্ব্বকথা সকলি জানেন, আপনিও ভুগেছেন—কিন্তু নিজ গুণে সকল ঢেকে ঢুকে লইলেন—গুপ্ত কথা ব্যক্ত করিলে মতিলাল মারা যায়—তাহার কলিকাতায় থাকাও হয় না ও স্কুলে পড়াও হয় না। বেণী বাবুর নিতান্ত বাসনা সে কিছু লেখাপড়া শিখিয়া কোন প্রকার মানুষ হয়।

 অনন্তর অন্যান্য প্রকার অনেক আলাপ করিয়া বেচারাম বাবুর নিকট হইতে বিদায় হইয়া বেণী বাবু মতিলালকে সঙ্গে করিয়া শরবোণর সাহেবের স্কুলে আসিলেন। হিন্দু কালেজ হওয়াতে শরবোণর সাহেবের স্কুল কিঞ্চিৎ মেড়ে পড়িয়াছিল এজন্য সাহেব দিন রাত্রি উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছিলেন—তাঁহার শরীর মোটা—ভুরুতে রোঁ ভরা—গালে সর্ব্বদা পান—বেত হাতে—এক২ বার ক্লাশে২ বেড়াইতেন ও এক২ বার চৌকিতে বসিয়া গুড়গুড়ি টানিতেন। বেণী বাবু তাঁহার স্কুলে মতিলালকে ভর্ত্তি করিয়া দিয়া বালীতে প্রত্যাগমন করিলেন।