পাতা:আলালের ঘরের দুলাল.djvu/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
[ ৫৫ ]

না পারিয়া কহিলেন, এখন বিলাপের সময় নয় যাতে তাঁর পরকাল ভাল হয় এমনতো চেষ্টা করা কর্ত্তব্য— তিনি তো কম লোক ছিলেন না? বাঞ্ছারাম বাবু তামাক্ খাচ্ছেন ও হাঁ হাঁ বল্‌ছেন— ও কথায় বড় আদর করেন না— তিনি ভাল জানেন বেল পাক্‌লে কাকের কি? আপনি এমনি বুকভাঙ্গা হইয়া পড়িয়াছেন যে উঠে যেতে পা এগোয় না— যা শুনেন তাতেই সাটে হেঁ হুঁ করেন— আপনি কি করিবেন— কার মাথা খাবেন— কিছুই মতলব বাহির করিতে পারিতেছেন না। এক একবার ভাব্‌তেছেন তদ্বির না করিলে দুই একখানা ভাল বিষয় যাইতে পারে এ কথা পরিবারদিগকে জানালে এখনি টাকা বেরোয়— আবার এক২ বার মনে কর্‌তেছেন এমত টাট্‌কা শোকের সময় বল্‌লে কথা ভেসে যাবে। এইরূপ সাত-পাঁচ ভাবছেন, ইতিমধ্যে দরজায় গোল উঠিল— একজন ঠিকা চাকর আসিয়া একখানা চিঠি দিল— শিরনামা বাবুরাম বাবুর হাতের লেখা কিন্তু সে ব্যক্তি সরেওয়ার কিছুই বলিতে পারিল না, বাটীর ভিতরে চিঠি লইয়া যাওয়াতে গৃহিণী আস্তে ব্যস্তে খুলিয়া পড়িলেন। সে চিঠি এই—

 “কাল রাত্রে ঘোর বিপদে পড়িয়াছিলাম— নৌকা আঁদিতে এগিয়ে পড়ে, মাজিরা কিছুই ঠাহর করিতে পারে নাই, এমনি ঝড়ের জোর যে নৌকা একবারে উল্টে যায়। নৌকা ডুবিবার সময় এক২ বার বড় ত্রাস হয় ও এক২ বার তোমাকে স্মরণ করি— তুমি যেন আমার কাছে দাঁড়াইয়া বলিতেছ— বিপদ কালে ভয় করিও না— কায়মনোচিত্তে পরমেশ্বেরকে ডাকো— তিনি দয়াময়, তোমাকে বিপদ থেকে অবশ্যই উদ্ধার করিবেন। আমিও সেই মত করিয়াছিলাম। যখন নৌকা থেকে জলে পড়িলাম তখন দেখিলাম একটা চড়ার উপর পড়িয়াছি— সেখানে হাঁটু জল। নৌকা তুফা-