পাতা:আলোর ফুলকি.djvu/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৪
আলোর ফুলকি

 কুঁকড়োর মনে হল, ঠিক সবাই পাগল হয়ে গেছে। এ-সব কী খেয়াল। তিনি সাফ জৰাব দিলেন, তিনি কোনো গানের ইস্কুলে গান শেখেন নি, শাস্তর-মাস্তর তিনি জানেনও না মানেনও না, গোলাপ যেমন ফুল ফুটিয়ে চলেছে, তিনি তেমনি গান গেয়ে চলেছেন, এইটুকুই তিনি জানেন।

 কুঁকড়ো শাস্ত্রের কিছুই জানেন না দেখে অন্য মোরগগুলো তর্ক ছাড়লে। কিন্তু গোলাপের শোভা কি কুঁড়িতে কি ফোটা অবস্থায় ময়ুরটার অসহ ছিল, দেখলেই সে ঠোকর দিতে ছাড়ত না; কুঁকড়ে গোলাপের নাম করতেই ময়ুরট অমনি বলে উঠল, “গোলাপ আবার একটা ফুলের মধ্যে নাকি?” -

 কুঁকড়ো গোলাপের নিন্দে শুনে রেগেই লাল; তিনি সব মোরগকে শুনিয়ে বললেন, “কুঁকড়ে কিম্বা মোরগ হয়ে গোলাপের নিন্দে যে সয় সে নরাধম কুলাঙ্গার...।”

 “হেঃ তে-রি-গো-ল-প” বলে বাজখাই মোরগ তাল ঠুকে উপস্থিত, “আওতে, কুঁকড়ে দেখে” বলে।

 “আও।” বলেই কুঁকড়ো বুক-ফুলিয়ে এগিয়ে এসে বললেন, “তোকেই খুঁজছিলেম ঝুটিকাট কাকাতুয়া।”

 বাজখাঁই কেওমেও করে বলে উঠল, “ক্যা বোলা? এ কেস বাত হুয়া?—কা-কা-তু-য়তুয়া কাকা।” w

 কুঁকড়ো ঠিক তেমনি স্বরে বলে উঠলেন, “ক্যা বোলা কা-কা-তুয়া।”

 খানিক দুজনে চোখ পাকিয়ে পালক ফুলিয়ে এ-ওর দিকে চাওয়াচায়ি হল। তার পর বাজখাঁই বললে, “তুমসে কুস্তিগীর পাহালোয়ান জাহানদার জবরদস্ত দশ জোয়ানকো সাথ বেলায়েৎমে ময় লড়া হু, আউর জিতা হু, দো দশকে ঘয়েল ভি কিয়া।”

 কুঁকড়োর কাজ খুন নয়— ভয় যারা পায় তাদের অভয় আর আলো দেওয়া। তিনি কিন্তু তাই বলে কাপুরুষ ভীরু ছিলেন না, এগিয়ে এসে বললেন, “তবে লড়ায়ের আগে একবার আলাপ-পরিচয়টা হয়ে যাক ৷”

 বাজখাঁই চেচিয়ে বললে, “মের নাম ফতে-জঙ্গ তাগবাহাদুর মালিকিময়দান।”