পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ و ] ܓ" পিতৃ-জীবনের সেই অধ্যায়ের স্মৃতি হইতে সমুৎপন্ন হইয়াছিল,-নিজের বা দিয়া তিনি পরের ব্যথা বুঝিয়াছিলেন ; গঙ্গাপ্রসাদের অবস্থা ভাল হইলে তিনিও দুঃস্থ ছাত্রদের যথাসাধ্য সাহায্য করিতেন। • শেষ মুহুর্তে এক সাহেব-অধ্যাপকের কৃপায় গঙ্গাপ্রসাদ সেই দিনকার অবস্থা-সঙ্কট উত্তীর্ণ হইয়াছিলেন । গঙ্গাপ্রসাদের সহধর্ম্মিণী জগত্তারিণী দেবী দেখিতে গৌরবর্ণা ছিলেন। অথচ গঙ্গা প্রসাদ শ্যামবর্ণ রোগাটে ছেলে,-অবস্থা এত সঙ্কীর্ণ যে, কলেজের বৃত্তির কয়েকটি টাকার উপর ভরণ-পোষণ নির্ভর করিত। শ্বশুর-বাড়ীর মেয়েদের কেহ কেহ বিবাহের পর গঙ্গাপ্রসাদকে দেখিয়া, এমন সুশ্রী ও লক্ষণােক্রান্ত মেয়ের বর তাহার যোগ্য হয় নাই, এই আলোচনা করিতেছিলেন । গঙ্গা প্রসাদের শ্বশুর হরলাল বলিলেন,-“এই বালককে আমি নিজে মনোনয়ন করিয়াছি, কয়েক বৎসর পরে দেখিবে-আমার কন্যা ইহার ঘরে যাইয়া লক্ষনীর ঘট স্থাপন করিবেতখন ইহার অবস্থা দেখিয়া তোমরা শ্লাঘা বোধ কৱিবে ।” বস্তুতঃ গঙ্গাপ্রসাদ যেরূপ অসাধারণ মানসিতার পরিচয় দিয়া গিয়াছেন, তাহা পর্যালোচনা করিলে বিস্ময় জন্মে। যে তারিখে তিনি ডাক্তার হইয়া ব্যবসায় আরম্ভ করেন, সেই তারিখ হইতে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ততিনি প্রতি দিন, প্রতি মাস ও প্রতি বৎসরের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব লিখিয়া গিয়াছেন, তাহা তাহার অসামান্য সহিষ্ণুতা ও অপরিসীম গৃহস্থালী ও নিয়মানুবর্ত্তিত প্রমাণ করে ; প্রতি দিনে ডাক্তারির ভিজিট, ডিপেসন্সরি ঔষধবিক্রয়, পুস্তকের আয় প্রভৃতি সমস্ত সেই হিসাবে প্রদত্ত হইয়াছে, প্রতিদিন কত ব্যয় হইয়াছে তাহার কড়াক্রান্তির সূক্ষম হিসাব সেই সকল খ:তায় আছে ; প্রত্যেক দফার জের টানিয়া মাস-কাবারী হিসাব রচিত হইয়াছে এবং বার মাসের পরে প্রত্যেক দফার পুনরায় জের টানিয়া বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রস্তুত হইয়াছে ; এইভাবে বৎসরের পর বৎসরের হিসাবের জের টানা হইয়াছে । এক দিন হুই দিন নহে, বৎসরের পর বৎসর-ভঁাহার দীর্ঘ কর্ম্ম-জীবনের প্রায় সকল বৎসরের হিসাব স্বীয় ছাপার মত পরিষ্কার অক্ষরে লিখিত হইয়া সংরক্ষিত আছে। কোন দিন, কোন বৎসরে তঁহার কত আয় হইয়াছে-তােহা দৃষ্টিপাত