পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अॉ७ऊांस-डिक९। ܘ ܘ ܕ করিয়া সর্ব্ব কর্ম্মে প্রবৃত্ত হইতেন। মাতা যখন বৈধব্যের কষ্টের দিকে ইঙ্গিত করিলেন, প্রতিবেশীর সদ্য বৈধব্যগ্রস্তা বালিকা-কন্যার নিদারুণ অদৃষ্টের কথার উল্লেখ করিয়া যখন তিনি বিদ্যাসাগরকে বলিলেন—“তুমি তো এত বড় পণ্ডিত, এই বালিকাদের এবম্বিধ দুৰ্গতি দূর করার কি কোন উপায় নাই ?” মানুষের দুঃখের কথা শুনিবার জন্য বিদ্যাসাগরের কান সর্বদা সজাগ থাকিত। উনানে কয়লার প্রাচুর্য্য ছিল, প্রতীক্ষা ছিল একটি স্মৃলিঙ্গের। মাতৃস্বরূপিণী শক্তি যখন এই স্মৃলিঙ্গ বিদ্যাসাগরের মনে উস্কাইয়া দিলেন, তখন এই টুলো ব্রাহ্মণ যে কিরূপ শক্তিময় হইয়া উঠিলেন, তাহ তাহার চরিত্যকারেরা বর্ণনা করিয়াছেন। শাস্ত্রের সমুদ্র মস্থিত হইতে লাগিল, বিদ্বেষীর সঙ্গে ঘোর লড়াই বাধিয়া গেল, কত পুস্তক লিখিত হইল, কত অর্থ ব্যয়িত হইল। বিরুদ্ধবাদিগণের পুঞ্জীভূত আক্রোশ তিনি নিজে শিরাধার্য্য করিয়া লইয়া স্বীয় জ্যৈষ্ঠ পুত্রকে পর্য্যন্ত সামাজিক অভিশাপের ভাজন করিলেন । আশুতোষ বিচারপতির পদ গ্রহণ করিবেন কি না, এজন্য মাতৃআজ্ঞার প্রতীক্ষা করিয়াছিলেন এবং যে পর্য্যন্ত পূজনীয়া জগত্তারিণী দেবী অনুমোদন না করিলেন, সে পর্য্যন্ত কার্য্য গ্রহণ করেন নাই। লর্ড কার্জন তঁহাকে শিক্ষা-সংক্রান্ত গুরুতর কার্য্যের ভার দিয়া বিলাতে পাঠাইতে চাহিলে তিনি বড়লাটের আদেশ পালন করেন নাই। লর্ড কার্জন বলিলেন,-“আপনার মাকে বলিবেন, ভারতের মহামান্য রাজপ্রতিনিধির আদেশে আপনাকে যাইতে হইবে।” মুহুর্ত্ত মাত্র চিন্তা না করিয়া আশুতোষ বলিলেন,-- “আমার মাতা কি উত্তর দিবেন, তাহা আমি বলিতে পারি। তিনি বলিবেন, পুত্রের প্রতি র্তাহার আদেশের উপর আর কাহার ও আদেশ করিবার অধিকার আছে, তাহা । তিনি স্বীকার করেন না ।” একবার তঁহার বিলাত যাইবার প্রবল আকাজক্ষ হইয়াছিল,- র্তাহার খুল্লতাত রাধিকাপ্রসাদ এজন্য আয়োজন এক রূপ প্রস্তুত করিয়াছিলেন, কিন্তু তিনি পিতার নিষেধে যাইতে পারেন নাই। এবার পিতার অভিভাবকত্ব নাই, তিনি স্বয়ং কর্ত্তা ; কিন্তু এই নর-শার্দ্দল মাতার বক্র দৃষ্টিতে -মেষবৎ হইয়া বিদেশে যাওয়ার প্রস্তাব অগ্রাহ করিলেন। বিদ্যাসাগর ও আশুতোষ মাতৃমন্দিরে যে পূজার ডালি দিয়াছেন, তাহৰ অধুনা বিপর্য্যন্ত, পথভ্রষ্ট বাঙ্গালী যুবকমণ্ডলীর আদর্শ হওয়া উচিত। বিধবা কন্যার বিবাহেও তিনি মাতার সম্মতি লাভ করিয়া অগ্রসর হইয়াছিলেন এবং যখন সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে তেঁাহার স্বল্প সময়ের অনুপস্থিতি-কালে জগত্তারিণী দেবী স্বৰ্গারোহণ করিলেন, তখন মাতৃশোক তঁহার হৃদয়ে যে শেল বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহা তাহার স্বীয় আকস্মিক মৃত্যুকে পথ দেখাইয়া আনিয়াছিল। বিদ্যাসাগরের জীবনে মাতা ভগবতী। দেবীর এত প্রভাব ছিল যে, তাহা লইয়া একখানি স্বতন্ত্র পুস্তক লিখিত হইতে १ig ।