পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন-মধ্যাহ্নে ዓዓ প্রতিষ্ঠানের একটা উদ্দেশ্য ছিল, যেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সরকারের প্রদত্ত নির্দিষ্ট ক্ষমতানুসারে স্কুল ও কলেজগুলিকে কতকগুলি নিয়মানুসারে পরিচালনা করিতে পারে। সুতরাং প্রথম হইতেই এই সকল প্রতিষ্ঠান স্বাধীন বিদ্যায়তনস্বরূপ উদ্ভূত হয় নাই। সিনেটের সদস্যগণের অধিকাংশই সরকারের মনোনীত লোক এবং তঁাহারা সরকারী আইন-কানুনের অধীন হইয়া প্রদত্ত ক্ষমতার গাণ্ডির মধ্যে কার্য্য করিতে নিয়োজিত হইয়াছেন, এবং তঁহাদের কার্য্য-রীতির উপর। সর্ব্বদা সরকারের তত্ত্বাবধান থাকিবে,-ইহাই তাহদের নিয়োগের সর্তা।” চান্সেলার উক্ত কথাগুলি উদ্ধত করিয়া বলিয়াছিলেন,-“সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই সম্বন্ধ গভর্ণমেণ্ট নূতন করিয়া সৃষ্টি করেন নাই,-ইহা চিরদিনই । আছে । আমাদের এখন দেখিতে হইবে যে, আমরা বিশ্ববিদ।ালয়ের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠতর ভাবে মেলামিশা করিয়া এই চিরন্তন সম্বন্ধটি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে প্রকৃত হিতকর করিয়া তুলিতে পারি।” কিন্তু আশুতোয্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই ঘনিষ্ঠতা খুব সুচক্ষে দেখেন নাই। তিনি হয়ত মনে করিয়াছিলেন, কোন প্রবল শক্তি যদি একটা প্রতিষ্ঠানে যাইয়া ঘনিষ্ঠতা করিতে চাহেন, তবে প্রতি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করাটা তাঁহাদের অভ্যাসে দাড়াইয়। যাইবে । তিনি শিক্ষা-সম্বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সম্পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী করিয়াছিলেন । এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিনি দিবারাত্র প্রাণপাত করিয়া খাটিতেছিলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্ষুদ্র স্বাের্থ তাহার নিকট স্বীয় দেহের রক্ত-বিন্দুর মূল্য বহন করিত, এখানে আমাদের ভবিষ্যদ্বংশধরেরা জ্ঞানের নানা পথে ধাবিত হইয়া ভারতবর্ষের গৌরব বৃদ্ধি কবিবেতাহারা শুধু বিদ্যার ক্ষেত্রে জগজ্জয়ী হইবে, এমন নহে,-কোন হুজুগে না। মাতিয়া নগরবাসীর সুমহান কর্ত্তবা-পালন করিতে শিখিবে-এই লক্ষ্যে তিনি পাথর কাটিয়া পথ তৈয়ারি করিতেছিলেন । তিনি জানিতেন, যাহা তিনি করিতেছিলেন তাহ পরম মঙ্গলকর,-শুধু ভারতবাসীর পক্ষে নহে-শাসকদিগের পন্থা যাহাতে নিরাপদ ও সুখদ হয়, অহিতকর সংসৰ্গ যাহাতে ছাত্রাদিগকে পরিচালিত না করে,-সেই মহাহিতকর লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি রাখিয়া তিনি জাতীয় শিক্ষা ও চরিত্র গড়িতে প্রাণান্ত চেষ্টা পাইতেছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠানের উপর শুধু দৈহিক বলে অথবা পদের গর্বে যে কেহ যখন