পাতা:আশুতোষ স্মৃতিকথা -দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V S 89 আশুতোষ-স্মৃতিকথা তিনি এই দেশকে সর্বপ্রকার বৈষম্য-মুক্ত, এক উন্নত জাতীয় আদর্শে অনুপ্রাণিত দেখিতে চাহিতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি তঁাহার উদ্ভাবিত অপর একটি বৃহৎ ভবিষ্য সম্ভাবনার ক্ষেত্র। ত্রিবান্ধুর হইতে তিনি রাওবাহাদুর অনন্তকৃষ্ণকে আহবান করিয়া ‘এন গুপলজি’-বিভাগের ভার অর্পণ করিলেন, এই বিষয়ে রাও বাহাদুর একখানি বৃহৎ গ্রন্থ রচনা করিয়া যশস্বী হইয়াছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আশুবাবুর সহিত বিরোধ করিয়া মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এইরূপ একটি পরিস্থিতির উদ্ভব করিয়াছিলেন, যাহাতে সেই প্রাচীন ইতিহাসজ্ঞ মহাপণ্ডিতের সহযোগিতা হইতে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বঞ্চিত হইয়া রহিল। এখনও মুসলমানদের কীর্ত্তি দেশময় পড়িয়া আছে। হিন্দু ও বৌদ্ধ-কীর্ত্তির অনেকগুলিই বহু শতাব্দী পূর্বে মাটির নীচে গা-ঢাকা দিয়া আছে, তাহা উদ্ধার করা কষ্টসাধ্য। কিন্তু মুসলিম-কীর্ত্তি এখনও পৃথিবীর উপর মাথা জাগাইয়া আছে, তঁহাদের লিখিত বহু পুস্তক এখনও পাওয়া যাইতে পারে ; ইসলামিক সংস্কৃতির পথ সুগম করিয়া দিয়া আশুতোষ মুসলমানদের যে সুযোগ করিয়া দিয়াছেন, তাহাদ্বারা তাহারা অচিরে বিশেষরূপ উপকৃত ইসলামিক সংস্কৃতির হইবেন, ইহা আমরা আশা করি । তিনি মুসলমানদিগকে প্রতি অনুরাগ কিরূপ ভালবাসিতেন, তাহার পরিচয় আমি অনেক সময়ে পাইয়াছি। তঁহার একান্ত অনুরক্ত ও প্রতিভাজন ভক্ত ছিলেন আব্দ স্না সর ওয়াদী ও হাসান সরওয়াদী। যেদিন ( তখনও ইহারা ‘স্যার’ হ’ন নাই ) আশুতোষ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হ’ন, সেদিন আব্দদুল্লা সরওয়াদী তঁহার ভূতগণকে অনেকগুলি টাকা বখশিশ, দিয়াছিলেন। আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম, আমি আব্দষ্কার পকেট হইতে অবশিষ্ট ৫০২ টাকার নােট কাড়িয়া লইলাম এবং বলিলাম-“এ দিচ্ছি না, এই আনন্দের দিনে এ টাকা আমরা সন্দেশ খাওয়ার জন্য রাখিয়া দিব।” আব্দ স্ন সরওয়াদী হাসিয়া বলিলেন“বেশ, টাকা রাখুন, যদি বেশী কিছু দরকার হয় ; তবে আরও দিতে পারি।” দুই-এক মিনিট পরে তিনি উঠিয়া গেলেন। আমি আশুবাবুকে বলিলাম“টাকা তো ফিরাইয়া দেই নাই, হয়ত উনি নীচে অপেক্ষা করিতেছেন, এখনই টাকার জন্য আবার আসিবেন।” উত্তরে তিনি বলিলেন—“আপনি শীঘ্র