পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ
১২২

যাহা-কিছু দেখিয়াছিলাম, সমস্তই এই চমৎকারজনক দৃশ্যের নিকট হার মানে। ভারতবর্ষীয় পুষ্পের নিকট আমাদের ছোট ছোট সুন্দর ফুলগুলি যেরূপ,–এই সকল লাল পাথরের রাশি-রাশি প্রকাণ্ড শুপের নিকট, এই সকল বিংশতিবাহু বিংশতিমুখ দেবতাদিগের নিকট, আমাদের সাদাটে রঙ্গের ছোট-ছোট প্রস্তরে গঠিত, “সেণ্ট” ও “এঞ্জেলে” ভূষিত ক্যাথিড্রাল গির্জ্জাগুলিও তদ্রুপ।

 প্রথম ঘেরটি যার-পর-নাই বিরাট প্রকাণ্ড; উহা মন্দিরের অন্যান্য অংশ নির্ম্মিত হইবারও বহুপূৰ্বে বিরচিত—কোনও দুজ্ঞেয় পুরাকালের সামিল বলিয়া মনে হয়। কোন এক যুগের লোকেরা “ব্যাবেল” মন্দিরের মত একটা প্রকাণ্ড মন্দির এখানে নির্মাণ করিবে বলিয়া কল্পনা করিয়াছিল, কিন্তু মন্দিরটি সমাপ্ত না হইতে হইতেই, তাহাদের কল্পনা-বত্নি বোধ হয় নিৰ্বাপিত হইয়া যায়। যে তোরণের মধ্য দিয়া এই ঘেরের ভিতরে প্রবেশ করিতে হয়, উহার খিলান ৪০ ফুটের উদ্ধে বিলম্বিত; এবং উহা ১৩১৪ গজ পরিমাণ—দীর্ঘ অখণ্ড প্রস্তরসমূহে নির্মিত। উহার শীর্ষদেশে একটি ত্রিকোণাকৃতি অসমাপ্ত চূড়ার তলদেশের নিদর্শন এখনও দৃষ্ট হয়। ঐচুড়া সমাপ্ত হইলে, একটা ভীষণ প্রকাণ্ড অসম্ভব ব্যাপার হইয়া উঠিত, সন্দেহ নাই। সমস্তই তাবৎ লোহিত বর্ণে রঞ্জিত। এবং উহার খোদাই-কার্যখচিত আলিসার উপর কতকগুলি পবিত্র টিয়া পাখী সপরিবারে বাস করে;—মনে হয়, যেন উহাতে উজ্জ্বল সবুজের কতকগুলি দাগ পড়িয়াছে।

 তোরণগুলির অপর দিকে, মন্দিরের উদার প্রশস্ত বীথিসমূহ প্রসারিত; ক্রমপরম্পরাগত অন্যান্য ঘেরগুলির মধ্য দিয়া এই সমস্ত বীথিগুলি বরাবর চলিয়া গিয়াছে। উহাদের দুই ধারে ধর্ম্মসংক্রান্ত বিবিধ ইমারৎ, মেছো-, পুষ্করিণী, বাজার, কুলুঙ্গীর মধ্যে আসীন বিবিধ দেবমূর্তি, উচ্ছি তৃ-স্তম্ভ প্রস্তরগঠিত দ্বারহীন সেকেলে-ধরণের মণ্ডপগৃহ;—এই মণ্ডপগূহের