পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

দিয়া, এবং নানা প্রকার মিথ্যা কথা রটনা করিয়া, পরস্পরের বিরুদ্ধে পরস্পরকে উত্তেজিত করিয়া দিল। তখনই বিদ্বেষবুদ্ধি ও দুর্ভাগ্য প্রাসাদের মধ্যে প্রবেশ করিল। কিন্তু কোনও দুষ্কর্ম আচরিত হইবার পূৰ্বেই, দেবযোনিরা এ দিকে অনেক যুঝাযুঝির পর, তাহাদের মনকে আবার অধিকার করিল। তখন আবার রাজকুমারগণ স্বকীয় চিত্তস্থৈর্য্য লাভ করিল, এবং সেই রাজকুমারীর সহিত ভগিনী-সম্বন্ধ পাতাইয়া, কোন প্রকারে কালযাপন করিতে লাগিল। পরে বার্ধক্য উপস্থিত হইলে, যখন তাহাদের সমস্ত বাসনা নির্বাপিত হইল, তখন তাহারা কর্ত্তব্যপালনের আত্মপ্রসাদ অনুভব করিতে লাগিল; এবং তাহাদের গৃহ আবার সুখশান্তিতে পূর্ণ হইল। প্রত্যেক অঙ্কের শেষে, কিছু কালের জন্য যে সময়ে বিরাম হয়, সেই বিরামকালে, আমি বালামণির নেপথ্য-কক্ষে গমন করিলাম, আমি তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিব—এ সংবাদ পূর্ব্বেই তাহাকে দেওয়া হইয়াছিল। আমি তাহার রূপলাবণ্যের প্রশংসা করিলাম, এবং বলিলাম, তাহার গৃহীত রাজকুমারীর ভূমিকাটি বিশুদ্ধরূপে অভিনীত হইয়াছে। তাহার ক্ষুদ্র কক্ষটি নিতান্ত সাদাসিধা ধরণের—ঘরের মেজে সপ দিয়া মোড়া। তাহার ইতস্ততঃ-বিকীর্ণ হীরক-অলঙ্কার ও অঙ্গভূষণাদি দেখিয়া বিস্ময়ে অভিভূত হইতে হয়,—মনে হয়, চাষার কুটীরে কোনও ঔপন্যাসিক দৈত্য আসিয়া এই সকল বিচিত্র উপহার বুঝি বর্ষণ করিয়াছে। কক্ষদ্বারে আসিবামাত্রই, তাহার ভৃত্যেরা, চিরপ্রথানুসারে, জরি-বিজড়িত একটি স্কুল ফুলের মালা সহজ-শোভন শিষ্টতা-সহকারে, আমার গলায় পরাইয়া দিল। বালামণি মন খুলিয়া আমার নিকট বলিল,—পুরাতন উৎকৃষ্ট নাটকগুলি হাতে পুনরুজ্জীবিত হয়, সেই উদ্দেশ্যেই এই নাট্যশালা স্থাপিত হইয়াছে। আমি যখন বলিলাম, আমার ফরাসী বন্ধুবর্গের নিকট আমি তাহার কথা বলিব, তখন সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিল।

 তাহার পরদিন, কোন একটা সাধারণ স্থানে, তাহার সহিত পুনর্ব্বার