পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তাঞ্জোরের অদ্ভূত শৈল।
১৫৩

করিয়া তাহার মন্দির প্রদক্ষিণ করেন, মাদুরার শিব পাৰ্বতীও সেইরূপ প্রতি বৎসর, তাহাদের জন্য খনিত একটা বৃহৎ জলাশয়ের চতুর্দিকে নৌকা করিয়া পরিভ্রমণ করেন। সেই নৌযাত্রার পূর্ব্বদিনে আমরা এখানে আসিয়াছি।

 কিন্তু পরশ প্রত্যুষে, যখনই মন্দিরের মধ্যে একটু আলো দেখা দিবে, পুরোহিত সেই গুপ্ত কক্ষের দ্বার আমার নিকট উদ্ঘাটিত করিবেন এবং আমাকে দেবীর বত্নভাণ্ডার প্রদর্শন করিবেন।


শিবের নৌকা।

 বলা বাহুল্য, এই নৌকাখানা একটা প্রকাণ্ড ব্যাপার হইলেও নিতান্ত ক্ষণস্থায়ী কতকগুলা হালকা বাঁশে নির্মিত। তিন-‘ডে’ ওয়ালা জাহাজ অপেক্ষাও ইহা বড়;—এক প্রকার পরী-প্রাসাদ বলিলেও হয়। ইহার পৃষ্ঠভাগ সোনালি পাতমোড়া মোটা কাগজের, অথবা রেশমের। ইহাতে মন্দিরের ন্যায় কতকগুলা চূড়া, কাগজের ঘোড়া, কাগজের হাতী রহিয়াছে; আর কতকগুলা ছোট ঘোট নিশান উড়িতেছে। আমরা য়ুরোপীয়, আমাদের চোখে, ইহার সব দোষ খণ্ডিয়া যায় ইহার অতিমাত্র বৈদেশিকতায়, ইহার অদ্ভুত বিচিত্র কল্পনা-লীলায়, ইহার সেকেলে ধরণের সাজসজ্জায়।

 এখন অপরাহ্ন দুই ঘটিকা। সরোবরের উপর,—উহার বিজন তটভূমির উপর,প্রখর রৌদ্র। মান্ধাতার আমলের সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হইয়া, এই নৌকাখানা এইখানেই, প্রকাও ঘাটের সিড়িতে বাঁধা রহিয়াছে। এই সময়ে শিবের নৌকাররাহণ করিবার কথা। কিন্তু কেহই আসে নাই,—এখনও কাহারও সাড়াশব্দ নাই।

 এই সরোবরটি মানুষের হাতে খনিত চতুষ্কোণ; তটের ঘের ৯০০ কিংবা ১২০০ গজ হইবে। ভক্তগণ যাহাতে সোবরে নামিতে পারে,