পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ
১৫৬

বিপরীত-প্রমাণ কৃত্রিম হাতের মধ্য হইতে উহাদের একটা আসল হাত বাহির হইয়া পড়িয়াছে;—ইহা বানরের হাতের ন্যায়, কিংবা শিশুর হাতের ন্যায় ক্ষুদ্র। হস্তপুট শম্ব কাকৃতি। হাতের রঙ্গ দেহের রঙ্গেরই মত গোলাপী। * *

 সূর্যের প্রখর তাপ; ঢাক ঢোল শানাইয়ের ঘোর বাদ্যঘটা। এ দিকে চৰ্মাবরণে আচ্ছাদিত সেই মাঝিমাল্লারা মৃতজাত-শিশু প্রায় পুতুলগুলাকে রত্নালঙ্কার ও কিংখাব-বস্ত্রে আচ্ছাদিত করিয়া নৌকায় লইয়া গেল; এবং নৌকার অন্তরতম প্রদেশে সিংহাসনের উপর বসাইয়া, মোটা কাপড়ের পর্দার আড়ালে উহাদিগকে অদৃশ্য করিয়া রাখিল।

 এইখানেই সমস্ত শেষ। সমারোহের ঠাট—হস্তী, ছত্র, সমস্তই চলিয়া গিয়াছে। সবোবরের তটদেশ আবার মরুভূমিতে পরিণত হইল। কেবল আজ রাত্রে একবার বিগ্রহগুলিকে সরোবরের চারিধারে ঘুরাইয়া আনা হইবে।

 দিবসের প্রখর অত্যাচার এবং রশ্মি ও বর্ণচ্ছটার উন্মত্ত উৎসব-লীলা থামাইয়া দিয়া,বৃদ্ধ ভারতকে একটু বিশ্রাম দিবার জন্য, আবার রাত্রি আসিয়া উপস্থিত হইল। নীলিম কৃষ্ণবর্ণে ধরাপৃষ্ঠ আচ্ছন্ন ছিল,এক্ষণে সধুর চন্দ্রমা সমুদিত হইয়া, ধীরে ধীরে সমস্ত পদার্থ রজতকিরণে রঞ্জিত করিল। এই সময়ে ভক্তগণ দলে দলে সরোবরের ধারে আসিয়া, তিনটি প্রস্তরনির্মিত ঘাটের প্রত্যেক ঘাটের সিড়িতে নামিয়া, তিন-সারি তৈলসিক্ত দীপ-শলিত জালাইবার জন্য আগ্রহসহকারে প্রবৃত্ত হইল। এই প্রকাণ্ড চৌকোণা সরোবরের চারিধারেই তিন-সারি ছোট ছোট প্রদীপ সজ্জিত রহিয়াছে। সরোবরমধ্যস্থিত দ্বীপে যে মন্দিরাদি রহিয়াছে, তাহাতেও দীপাবলী জ্বালান হইল। শুভ্র চন্দ্রালোকে সমস্তই ধপ ধপ, করিতেছেতথাপি, অনলশিখাচ্ছটা চতুর্দিকে বিকীর্ণ হইল।  সূর্য্যাস্ত-সময় হইতে জনতার আরম্ভ হইয়াছে। যে সব ছায়াতরুর