পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হৈদরাবাদে।
১৮৭

ধূলির উপর আসিয়া পড়িতেছে।•••কে তবে বলিবে, পশ্চিমাঞ্চল হইতে দুর্ভিক্ষ আসিয়াছে—স্বকীয় বিকট দশন বাহির করিয়া দুর্ভিক্ষ ইহারই মধ্যে সীমান্তদেশ পার হইয়াছে। না-জানি তবে কোন্ জলাশয়ের জলসেকে,—কোন্ বিশেষ-রক্ষিত উদ্যানে এই সমস্ত ফুল ফুটানো রহিয়াছে।

 অবশেষে, সূর্যাস্তসময়ে, “সহস্র-এক রজনীর” ব্যক্তিগণ গৃহ হইতে বাহির হইতে লাগিল—সেই সব সৌখীন লোক, যাহাদের নেত্র নীলাঞ্জনে চিত্রিত, যাহাদের শ্মশ্রুজাল সিন্দুর-রঙ্গে রঞ্জিত, যাহারা কিংখাপের পোক কিংবা জরি-বসানো মখমলের পোষাক পরিয়া বাহির হইয়াছে, কণ্ঠে মণিমুক্তার কণ্ঠহার ধারণ করিয়াছে, এবং যাহাদের বামহস্তের মুষ্টির উপর একএকটা পোপাখী রহিয়াছে।

 “স্বাগত নিজামবাহাদুর?”—এই কথাগুলি আবার একটা দ্বার প্রকোষ্ঠের চূড়াদেশে লিখিত রেখিলাম; সেই চূড়াদেশে নারাঙ্গি-রঙের একটা ক্রেপ, কাপড় টানা-—তাহাতে নেবু-হলদে ও গন্ধকি-হলদে রঙের ঝালর ঝুলিতেছে, ঝালরের উপর সবুজ-রঙেব চুমকি বসানো। এই দ্বারপ্রকোষ্ঠের পরেই—স্বর্ণচূড়া ও স্বর্ণ-"অর্ধচন্দ্র"-বিশিষ্ট, তুষার-শুভ্র একটা মজিদ। এই সান্ধ্য-নমাজের সময়ে, ভক্ত মুসলমানের এই মজিদে আসিয়া সমবেত হইয়াছে। উহাদের শুভ্র পরিচ্ছদ,—মাথায় মলমলের কাপড় জড়ানো পাগড়ি; দূর হইতে মনে হয়-যেন বিচিত্ররঙের এক প্রকার খুব বড়-বড় ফুল ছড়ান রহিয়াছে।••'

 কিন্তু এই সময়ে একটা জনরব উঠিল,—নিজামের আসিতে এখনও বিলম্ব আছে; রামাদানের মাস নিশ্চয়ই পার হইয়া যাইবে, বোধ হয় আগামী মাসে আসিবেন, কিংবা আরো বিলম্ব হইতে পারে। ককে ‘আসিবেন, আল্লাই জানেন।