পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হৈদরাবাদে।
২০৭

গতায়াতে মসৃণ হইয়া এরূপ পিছল হইয়াছে যে, বিপদের বিলক্ষণ সম্ভাবনা।

 না ভাবিয়া-চিন্তিয়া, কেবলমাত্র স্বাভাবিক সংস্কারের বশে, আমরা নিস্তব্ধভাবে অতি সাবধানে উপরে উঠিতে লাগিলাম। কিন্তু ছোটখাটো কোন-একটা পাথর যেই নড়িয়া উঠে, -কোন-একটা মুড়ি যেই গড়াইয়া যায়, অম্‌নি উহার শব্দে প্রতিধ্বনি জাগিয়া উঠে, আর আমরাও অনি থম্‌কিয়া দাড়াই। এখন আমাদের চতুর্দিকে বিবিধ ভীষণদৃশ্যের ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি হইতেছে। কোথাও কোন শিব বিবিধপ্রকার মুখভঙ্গি করিতেছেন; কোথাও কোন শিব কুঞ্চিত-কায় হইয়া আছেন; কোথাও কোন শি। স্বীয় শীর্ণশরীরকে ধনুকের মত বাঁকাইয়াছেন; কোথাও কোন শিব স্বীয় মাংসল-বক্ষ ফুলাইয়া আছেন;—কোথাও জননক্রিয়ায় বিল, কোথাও হননক্রিয়ায় উন্মত্ত।

 এই ঘন-অন্ধকার মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করিবার সময়, সঙ্গে কোন অস্ত্র লই নাই, একগাছি ছড়িও লই নাই, লওয়া আবশ্যকও মনে করি নাই। কোন মনুষ্য কিংবা হিংস্রপশুকর্তৃক আক্রমণের সম্ভাবনা আছে বলিয়া একবার মনে হয় নাই। তথাপি, কে জানে কেন, আমিও পথপ্রদর্শক ছাগপালকের ন্যায় ভয়ে ক্রমশ অভিভূত হইয়া পড়িলাম;—একপ্রকার “অন্ধকেরে” “কিম্ভুতকিমাকার” ভয়—যে ভয়ের কোন নাম নাই——যাহা বাক্যে ব্যক্ত করা যায় না।

 যে সকল ভীষণ দৃশ্য চারিদিকে প্রসারিত—তাহারই কোন চুড়ান্ত দৃষ্টান্ত সাঙ্কেতিক নিষ্ঠুর ব্যাপারসমূহের একটা চরম আতিশয্য,এইবার মন্দিরের অভ্যন্তরে গিয়া দেখিব, মনে করিতেছিলাম। কিন্তু না, এখানকার সমস্ত পদার্থেরই সহজ শান্তভাব। ঠিক যেন মরণত্রাসের পর মহাশান্তি আসিয়া মৃত্যুর পরপারে আমাকে অভিবাদন করিল এখানে মনুষ কিংবা পশুর কোন প্রতিকৃতি নাই; একটি মুক্তি নাই; ঝাঝির