পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উদয়পুরমন্দিরের ব্রাহ্মণ।
২৩১

এই সময়ে, মহারাজার একটা পোড়ো বাড়ীর উপর দিয়া ঘন ধূমপাশি নিয়ত সমুখিত হয়। (ইহা শুধু চতুর্দিক্‌স্থ হরিণদিগের পাদোথ্থিত ধূলারাশির আবর্ত; জঙ্গল শুকাইয়া যাইবার পর হইতে, মহারাজা স্বকীয় প্রাসাদের গবাক্ষ হইতে নীচে ভুট্টা নিক্ষেপ করেন; ইহাই খাইবার জন্য হরিণেরা এখানে প্রতিদিন সায়াহে সবেগে দৌড়িয়া আইসে•••)।

 দেখিলাম, একজন সন্ন্যাসী তাঁহার পশ্চাতে অবস্থিত দর্পণ, চূর্ণ ও লাল-রং আনিবার জন্য আসন হইতে উঠিয়াছে; তাঁহার পর, আবার সেই ধ্যানাসনে উপবিষ্ট হইয়া, শাদা চূর্ণে মুখমণ্ডল ধবলীকৃত করিয়া ললাঙের উপর শৈব চিহ্ন সঙ্গে অঙ্কিত করিতেছে। সায়া-ভোজের জন্য ময়ূর ও ঘুঘু চারিদিক্‌ হইতে আসিয়া জড় হইয়াছে। ইহারা ছাড়া সেখানে আর কেহই নাই। সন্ধ্যাগমে, তবে কাহা জন্য এত সাজসজ্জা!•••

 সে যাহাই হোক, তরুশাখার মধ্য দিয়া একদল অশ্ব খুব ছুটিয়া আসিতেছে, তাঁহারই পদ শুনা যাইতেছে। দরবারের ত্রিশজন সর্দার সমভিব্যাহারে রাজা চলিয়াছেন। অশ্বগুলা বিচিত্রবর্ণ সাজে সজ্জিত। ছিপছিপে-গঠন অশ্বারোহীরা সুদীর্ঘ শুভ্রপরিচ্ছদ পরিধান করিয়াছে। উদয়পুরী-ধরণে গুম্ফরাজি আড়াইয়া উপরদিকে ভোলা; ইহাদের দেহগঠন সুন্দর ও পুরুষোচিত, ফিঁক তাম্রবর্ণ, এবং এই উত্তোলিত ওক্ষের দরুণ মুখে কেমন একটু মার্জারভাব প্রকটিত।

 মহারাজাও অনুচরবর্গের সহিত ছুটিয়া চলিয়াছেন; তাঁহারও মার্জারবৎ শ্মশ্ররাজি; তাঁহারও মুখমণ্ডল, ও সাজসজ্জা অতীব সুন্দর এবং যার-পর-নাই বিশিষ্টধরণের।

 পত্রশূণ্ঠ একটা তরুবীথির মধ্য দিয়া তাঁহারা চলিয়া গেলেন। তাঁহাদের দেখিয়া, আমাদের মধ্যযুগের পাশ্চাত্য অশ্বারোহীদিগকে