পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজপুতরাজার গৃহে।
২৩৭

সময় হইয়াছে। আজ সরোবর প্রদক্ষিণ করিয়া, যেখানে হরিণেরা আসিয়া জড় হয়, সেই বাড়ী পর্যন্ত যাইবার কথা। এই ছাদের উপর যে-সকল ভৃত্য বড়-বড় প্রাচ্যধরণের বৃহৎ ছত্র মহারাজার মাথার উপর ধরিয়াছিল, তাহারা নীচে গিয়াও সেই সব ছত্র ধরিয়া মহারাজকে ছায়ায়-ছায়ায় রাখিতে লাগিল। নীচে অশ্বারোহী অনুচরবর্গ মহারাজার সহিত যাইবার জন্য প্রস্তুত।

 আমাকে বিদায় দিবার পূর্বেই, তিনি যে নূতন প্রাসাদটি নির্মাণ করাইতেছেন এবং যাহা এখনো শেষ হয় নাই, তাহা আমাকে দেখাইবার জন্য তাঁহার লোকজনকে আদেশ করিলেন; এবং সেই দ্বীপস্থ পুরাতন প্রাসাদগুলিও দেখাইবার জন্য নৌকা প্রস্তুত রাখিতে বলিবেন।

 আমাদের এই যুগে, পুরাতন জিনিষ সমস্তই লোপ পাইতেছে। সৌভাগ্যের বিষয়, এই ভারতে এখনো এমন কতকগুলি রাজা আছেন, যাহারা খাটি ভারতীয় ধরণের গৃহাদি-নির্ম্মাণে প্রবৃত্ত;—সেইরূপ ধরণের গৃহ, যাহা তাহার পূর্বপুরুষেরা সেই গৌরবান্বিত পুরাকালে উদ্ভাবিত করিয়াছিলেন।

 একটি চক্রাকৃতি ভূমিখণ্ড অন্তরীপের মত সরোবরের অভিমুখে চলিয়া গিয়াছে। এই ভূমিখণ্ডের উপর, খুব উচ্চদেশে, নূতন প্রাসাদটি প্রতিষ্ঠিত;—কতকগুলা শাদাশাদা দালানঘর, কতকগুলা শাদাদা চতুগৃহ;— সমস্তই মালাকৃতি কারুকার্যে ভূষিত;—শাদাটে পাথর কিংবা মার্বেলের সান বসানো। প্রাসাদটি এরূপভাবে নির্ম্মিত ও সংস্থাপিত যে, সেখান হইতে সরোবরের বিভিন্নভাগ বেশ দৃষ্টিগোচর হয়; একটা প্রকাণ্ড সোপান সরোবর পর্যন্ত নামিয়া গিয়াছে; তাহার দুই ধারে পাথরের হাতী। সরোবরটি অরণ্যসমাচ্ছন্ন পৰ্বতমালায় পরিবেষ্টিত। প্রাসাদের অভ্যন্তরে,—দেয়ালের গায়ে, কাচ ও চীনেমাটির (mosaic) বিচিত্র নকসা। অমুক ঘরে দেখিযে—শুধু গোলাপেরই শাখাপল্লব;