পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ

সুরঙ্গকারাগার। না জানি, কত গভীর পর্য্যন্ত পর্ব্বতগর্ভ কাটিয়া এই সকল অন্ধকূপ—এই সকল সুরঙ্গ প্রস্তুত হইয়াছিল।

 এই প্রাসাদের পাশাপাশি আরও কতকগুলি প্রাসাদ সারিসারি চলিয়াছে; এগুলি পর-পর অধিকতর বর্ব্বর-ধরণের। উহার মধ্যে একটি পালরাজাদিগের আমলের—আরও বেশী গুরুভার প্রস্তরপিণ্ডে গঠিত। আর একটি জৈনদিগের আমলের;—বিশেষ কোন গঠন নাই বলিলেও হয়;—পৰ্বতগাত্রের সহিত যেন মিশিয়া গিয়াছে; গুপ্তভাবে বন্দুক ছুড়িবার দুর্গরন্ধ্রের ন্যায়, ত্রিকোণাকৃতি শুধু কতকগুলা ছোট-ছোট গবাক্ষচ্ছিদ্র প্রাসাদগাত্রে পরিলক্ষিত হয়।

 তা ছাড়া, এখানকার গড়বন্দী ময়দানটা বিভিন্ন-ধরণের দেবালয়ে সমাচ্ছন্ন; উহাদের এই বিচিত্রতার মধ্যে হিন্দুধর্ম্মের সকল বিভাগেরই নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায়। এইখানে গর্ত্ত খুড়িয়া কতকগুলা চৌবাচ্ছা প্রস্তুত হইয়াছে; এই চৌবাচ্ছাগুলা এত বড় যে, শত্রুকর্ত্তৃক দুর্গ অবরুদ্ধ হইলে হাজার-হাজার লোককে অনেকদিন পর্য্যন্ত পানীয়জল জোগাইতে পারা যায়। সমস্ত স্থানটাই দেবপ্রতিমায় ও সমাধিমন্দিরে আচ্ছন্ন।

 একটা জৈনমন্দিরে গিয়া একটু দাঁড়াইলাম; পূর্ব্বে মোগলসৈন্য আসিয়া অত্রত্য প্রতিমাদিগকে বিকলাঙ্গ করে। আমাদের প্রাচীনকালের খৃষ্টধর্ম্মের কীর্ত্তিচিহ্নগুলার সহিত তুলনা করিবার জন্যই এইখানে একটু দাড়াইলাম।••• আমাদের খুব সুন্দর গির্জাগুলিও ছোট-ছোট অ-সমান প্রস্তরে গঠিত এবং আটা দিয়া জোড়া। কিন্তু এখানে, বড়-বড় পাষাণপিণ্ড—সব বাছা-বাছা ও সব সমান—এরূপভাবে পরস্পরের মধ্যে অনুপ্রবিষ্ট এবং ঘড়ির কল্‌-কব্জার মত এরূপ যথাস্থানে স্থাপিত যে, মনে হয় যেন এই প্রস্তরসমষ্টি একখণ্ড প্রস্তরের মত অনাদিকাল হইতে একইভাবে রহিয়াছে।•••

 এক্ষণে, আমার ভারতবাসী লোকদিগের সহিত আবার আমি সেই মন্থরগামী দোদুল্যমান হস্তীর পৃষ্ঠে আরোহণ করিলাম; আবার হস্তিপার্শ্ব-