পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মাদ্রাজে থিওসফিষ্টদের গৃহে।
২৮৭

 আরো খানিকটা নিস্তব্ধতার পর, আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,—মনে-মনে বুঝিতেছি, এবার আমি ছেলেমান্‌ষি-কৌতুহলের নিম্নভূমিতে নামিয়া আসিতেছি—তাই ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞাসা করিলাম;—“আপনারা কি সাধু সন্ন্যাসীদিগের সন্ধান আমাকে বলিতে পারেন,—ভারতের সেই-সব সাধুসন্ন্যাসী, যাঁহারা সিদ্ধপুরুষ বলিয়া প্রখ্যাত, যাঁহারা নানাপ্রকার অদ্ভুতকার্য্য এমন কি, অলৌকিক কার্য্য সাধন করিতে পারেন; অন্তত তাহা হইলে ইহা সপ্রমাণ হইতে পারে যে, এখানে এমন কিছু আছে, যাহা আমাদের বুদ্ধির অতীত—যাহা অতিভৌতিক, যাহা অতিমানুষিক।”

 আমার সম্মুখে যে হিন্দুটি বসিয়াছিলেন, তিনি তাঁহার তাপসসুলভ নেত্রদ্বয় ঊর্দ্ধে তুলিলেন; একটা মুখভঙ্গীর দ্বারা তাঁহার সূক্ষ্ম ও কঠোর মুখমণ্ডল সঙ্কুচিত হইল; তাঁহার মুখটি যেন শাদা পাগ্‌ড়ি দিয়া ঘেরা ‘দান্তে’র (Dante) মুখস্।

 —‘‘সাধু-সন্ন্যাসী?—সাধু-সন্ন্যাসী? সাধু-সন্ন্যাসী এখন আর নাই”—তিনি উত্তর করিলেন।

 এই বিষয়ে যাঁহার বিশেষ জ্ঞান আছে, তাঁহারই মুখে যখন শুনিলাম, সেরূপ সাধু-সন্ন্যাসী এখন আর নাই,—তখন এই পৃথিবীতেই যে অলৌকিক কাণ্ড দেখিব বলিয়া আশা করিয়াছিলাম, সে আশা আর রহিল না।

 —“বারাণসীতেও নাই?”—আমি এই কথা ভয়ে-ভয়ে জিজ্ঞাসা করিলাম। আমি আশা করিয়াছিলাম বারাণসীতে...আমি শুনিয়াছিলাম...

 আমি “বারাণসী” এই নামটি উচ্চারণ করিতে ইতস্তত করিতেছিলাম; কেন না, ঐটি আমার ‘হাতের রেস্তোর’ শেষ তাস; যদি সেখানে গিয়াও কিছু দেখিতে না পাই।...

 —“শোনো বলি। ভিক্ষু-সন্ন্যাসী, চেতনাহীন সন্ন্যাসী, হঠযোগসিদ্ধ অঙ্গবিক্ষেপকারী সন্ন্যাসী এখনো অনেক রহিয়াছে; তাহাদিগকে দেখিবার জন্য আমাদের সাহায্য তোমার প্রয়োজন হইবে না। কিন্তু যাঁহারা প্রকৃত