পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ
২৯১

 —“তাই বোধ হয়।”

 “আমরা তোমাকে ত্যাগের কথা বলিতেছি, আর তুমি কিনা ভোগের বাসনা করিতেছ!—তবে তুমি ভ্রমণই কর; যাও, দিল্লি দেখিয়া আইস, আগ্রা দেখিয়া আইস; যাহা তোমার ইচ্ছা হয়, যাহা তোমার ভাল লাগে, যাহাতে তোমার আমোদ হয়, তাহাই কর। শুধু এইটুকু আমাদের নিকট অঙ্গীকার কর যে, ভারত হইতে চলিয়া যাইবার পূর্ব্বে তুমি আমাদের বারাণসীর বন্ধুদিগের নিকট গিয়া কিছুকাল বিশ্রাম করিবে; আমরা তাঁহাদিগকে সংবাদ দিব, এবং তাঁহারা তোমার জন্য প্রতীক্ষা করিয়া থাকিবেন।”

 যে হিন্দুটিকে আমি কাল দেখিয়াছিলাম, তিনি নিস্তব্ধ ছিলেন; তিনিও অনুকম্পার স্মিতহাস্য মুখে প্রকটিত করিয়া অতীব মধুর দৃষ্টিতে আমাকে দেখিতেছিলেন। এই সময়ে এই বিভিন্নজাতীয় তাপসযুগলকে সহসা অতীব উন্নত, অতীব নমনীয়, অতীব রহস্যময় ও বুদ্ধির অগম্য বলিয়া আমার মনে হইতে লাগিল। সহসা তাঁহাদের এরূপ পরিবর্ত্তন কেন হইল বুঝিতে না পারিয়া, আমি বিশ্বস্তভাবে ও কৃতজ্ঞচিত্তে তাঁহাদের নিকট আমার মস্তক অবনত করিলাম।

 ভারত ছাড়িয়া যাইবার পূর্ব্বে, উহাদের বারাণসীর বন্ধুদিগের গৃহে কিছুকাল অবস্থিতি করিতে হইবে,—বেশ ত! সে ত ভাল কথাই! আমি আনন্দের সহিত এ প্রস্তাবে সম্মতি দিলাম। আমার মনে কেমনএকটা অগ্রসূচনা উপস্থিত হইল যে, সেখানকার আধ্যাত্মিক হাওয়াই আমার উপযোগী হইবে।

 সর্ব্বশেষে বারাণসী; উহাকে এখন আমি হাতে রাখিলাম। আমার ভয় হয়, পাছে কোন অকাট্য প্রমাণ পাইয়া দুইটি বিভীষিকার মধ্যে একটি বিভীষিকাকে আমার গ্রহণ করিতে হয়। হয়—চিরকালের মত ব্যর্থমনোরপ্ত হইব; নয়—অন্বেষণ করিয়া কিছু পাইব; যদি পাই, তাহা হইলে