তাহাদের বক্ষ ও কটিদেশ একখানা কাপড়ে ঢাকা; তাহারা গঙ্গার জলে শুধু তাহাদের পা ভিজাইতেছে—বলয়াদিবিভূষিত বাহু ভিজাইতেছে। তাহার পর একেবারে নদীর কিনারায় গিয়া ও অবনত হইয়া তাহাদের আলুলিত দীর্ঘকেশ জলের উপর আছড়াইতেছে; বক্ষের উপর দিয়া, স্কন্ধের উপর দিয়া জল গড়াইয়া পড়িতেছে; তাহাতে করিয়া তাহাদের রহস্যপ্রকাশক সূক্ষ্ম বস্ত্রখানি গায়ে একেবারে আঁটিয়া ধরিয়াছে; ঠিক যেন “পক্ষহীন বিজয়লক্ষ্মী”। নগ্নাবস্থা অপেক্ষা এ মূর্ত্তি আরও যেন সুন্দর, আরও যেন চিত্তচাঞ্চল্যকর।
গঙ্গাকে প্রণাম করিয়া পূজার অঞ্জলিস্বরূপ, গঙ্গার বক্ষে পুষ্পগুচ্ছ, পুষ্পমাল্য চারিদিক্ হইতে লোকে অজস্র নিক্ষেপ করিতেছে। ঘটি ভরিয়া, ঘড়া ভরিয়া জল লইতেছে; এবং প্রত্যেকে অঞ্জলি ভরিয়া জল উঠাইয়া পান করিতেছে।
এই সময়ে এইখানে ধর্ম্মভাবের এরূপ সর্ব্বগ্রাসী প্রভাব যে, এই সমস্ত রমণীয় নগ্নতার মেশামিশি ও ঘেঁষাঘেঁষিতেও কোন কুচিন্তার উদ্রেক হইতেছে বলিয়া মনে হয় না। পরস্পরকে কেহই তাকাইয়া দেখিতেছে না; দেখিতেছে শুধু নদীকে, সূর্য্যকে, আলোকের ও প্রভাতের মহিমাকে; সকলেই ভক্তিমুগ্ধ, সকলেই পূজায় মগ্ন।
স্নানের দীর্ঘ অনুষ্ঠান সমাপ্ত হইলে পর, রমণীরা শান্তভাবে জল হইতে উঠিয়া গৃহাভিমুখে চলিল; পুরুষেরা তাহাদের ডিঙির উপরে, তাহাদের পুষ্পমাল্য—তাহাদের দূর্ব্বাগুচ্ছের মধ্যে থাকিয়া পূজার আয়োজন করিতে লাগিল।
আহা! এই অতীতের লোকদিগের দৈনন্দিন জাগরণ কি চমৎকার! প্রতিদিন তাহারা ভগবানের আরাধনার্থে একত্র মিলিত হয়। ভাস্বর আকাশের নীচে, জলের মধ্যে, পুষ্পগুচ্ছ ও পুষ্পমাল্যের মধ্যে, একজন দ্বীনহীন সামান্যলোকেরও একটু স্থান আছে।…পক্ষান্তরে, পাশ্চাত্য যে