পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ
ভারতের অভিমুখে—যাত্রা-পথে।

লোহিত সমুদ্রে, মধ্যাহ্ন। আলোক, আলোক, এত আলোক যে এই আলোক দেখিয়া বিমুগ্ধ হইতে হয়, বিস্মিত হইতে হয়; যেন এক প্রকার আধো-আঁধার হইতে বাহির হইয়া চোখ্‌ আরও খুলিয়া গিয়াছে, আরও স্পষ্ট করিয়া দেখিতে পাইতেছি। আধুনিক জাহাজের সাহায্যে এই পরিবর্ত্তনটা খুব দ্রুতভাবে সংঘটিত হয়। এই সকল জাহাজের উপর এখন আর বাতাসের কোন হাত নাই; এই সকল জাহাজ, উত্তর দেশের শরৎকাল হইতে, আমাদিগকে হঠাৎ এইখানকার চির-গ্রীষ্মের মধ্যে আনিয়া ফেলে, খাতুর ক্রম-সংক্রমণ আদৌ উপলব্ধি হয় না।

 জল ঘোর নীল; রূপার ঝালরগুলা যেন ঝিক্‌মিক্‌ করিতেছে—নাচিয়া বেড়াইতেছে। মনে হইতেছে যেন আকাশ,পৃথিবী হইতে আরও দূরে সরিয়া গিয়াছে, মেঘগুলা বেন আরও সুস্পষ্ট আকার ধারণ করিয়া শূন্যে ঝুলিতেছে; আকাশের গভীরতা ক্রমেই প্রকাশ হইয়া পড়িতেছে; দূরত্বের মধ্যে জাহাজ যতই অগ্রসর হইতেছে, ততই আকাশকে আরও বেশী করিয়া উপলদ্ধি করিতেছি।

 আরও আলোক, ক্রমাগতই অলোক। বাস্তবিকই নেত্র যেন বিস্ফারিত হইয়া, বেশী বেশী রশ্মি, বেশী বেশী রং গ্রহণ করিতেছে।...তবে কি, নেত্র ইহার পূর্ব্বে ভাল করিয়া কিছুই দেখিতে পাইতেছিল না?—না জানি কোন্ তিমির-রাজ্য হইতে এই মাত্র বাহির হইয়াছে। ঘোর নিস্তব্ধতার মধ্যে, কাহারও আদেশের অপেক্ষা না করিয়া, এই যে শুভ্র আলোক-উৎ—