পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ।

সবের আয়োজন—স্বর্ণাভ আলোক-উৎসবের আয়োজন চতুর্দ্দিকে দেখা যাইতেছে-এ কিসের উৎসব?...

 এইখানে,—এই প্রাচ্য ভুখণ্ডের প্রাচীন সমাধিক্ষেত্রের উপর, বিলুপ্ত মানব-সঙ্ঘের এই ধূলি রাশির উপর, এই বিষাদময় উৎসব অবিরাম চলিতেছে; কেবল, উত্তর দেশের অভিমুখে গেলে, এ সব ভুলিয়া যাইতে হয়; তাহার পর, এই সব প্রদেশে ফিরিয়া আসিলেই আবার সেই একই দৃশ্য দেখিতে পাওয়া যায়, আবার বিস্ময়ে মন অভিভূত হইয়া পড়ে। সেই একই উষ্ণ ও অবসাদক্লান্ত উপসাগরের উপর—সেই একই প্রস্তরময় কিংবা বালুকাময় পুরাতন তটভূমির উপর,—সেই সব ধ্বংসাবশেষের উপর,—এবং যে সকল মৃত প্রস্তর-স্তূপ বাইবেল-বর্ণিত জাতিসমূহের গূঢ় রহস্যকে, পূর্ব্বপুরুষদিগের ধর্ম্মসমূহের গূঢ় রহস্যকে আগলাইয়া রহিয়াছে, সেই সব প্রস্তর স্তূপের উপর—এই আলোকরশ্মি অবিরাম পতিত হইতেছে। আমাদের কল্পনা, এই বিষাদময় আলোকের উৎসবকে দূর অতীতে লইয়া গিয়া, প্রাচীন পৌরাণিক কাহিনীর সহিত উহাকে একত্রে বাঁধিয়া দেয়; তাই মনে হয়, এই আলোক-উৎসব যেন অনাদি কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, এবং ইহার বুঝি শেষ নাই।...

 কিন্তু, বাইবেল-বর্ণিত এই অতীত,—যাহার আপেক্ষিক প্রাচীনতায় আমাদের বিভ্রম উপস্থিত হয়, যাহার উপর আমাদের এত বিশ্বাস,—জগতের ভীষণ অতীতের তুলনায় এই অতীতটা সে দিনের বলিলেই হয়। এই সমস্ত আলোক, যাহা আমাদের নিকট এত উজ্জ্বল বলিয়া মনে হয়, যাহাতে আমাদের নেত্রের মত্ততা উপস্থিত হয়, উহা আমাদের ক্ষুদ্র সূর্য্যের ক্ষণস্থায়ী ক্রিয়ামাত্র; এই সূর্য্য আমাদের এই ক্ষুদ্রতম পৃথিবীর উপর আলো দিতে দিতে ধীরে ধীরে একদিন নির্ব্বাপিত হইবে; এখন সূর্য্য সেই নির্ব্বাণের পথেই চলিয়াছে। আমাদের পৃথিবী, পাছে শীতল হইয়া পড়ে এই ভয়ে, সুর্য্যের খুব কাছে-কাছে রহিয়াছে; আরও তাহার ভয়, পাছে সেই ভীষণ অন্ধ-