পাতা:ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
ইংরাজ-বর্জ্জিত ভারতবর্ষ
৭২

মহারাণীর সহিত যুরোপসম্বন্ধে আমার কথাবার্ত্তা হইল। এই প্রসঙ্গে তাঁহার কল্পনা বিলক্ষণ উত্তেজিত হইয়া উঠিয়াছিল। আমি বুঝিলাম, ঐ সুদূরভূখণ্ড সম্বন্ধে জ্ঞানলাভকরাই তাঁহার জীবনের একটি চিরপোষিত স্বপ্ন। কিন্তু, মঙ্গলগ্রহের কিম্বা চন্দ্রলোকের কাল্পনিক দেশসমূহের ন্যায় এই য়ুবোপ তাঁহার পক্ষে দুরধিগম্য। কেন না, ত্রিবঙ্কুরে, কোন সম্ভ্রান্ত উচ্চকুলের রমণী, বিশেষত কোন রাজরাণী য়ুয়োপযাত্রা করিলে, তাঁহাকে জাত্যংশে পতিত হইয়া “পারিয়া’’র সামিল হইতে হয়।

 আর যে-কয়েকদিন আমি ত্রিবঙ্কুরে অবস্থিতি করিব, ইহার মধ্যে মহারাজার দর্শনলাভ আমার ভাগ্যে কখন কখন ঘটিতে পারে, কিন্তু এই লক্ষ্মীস্বরূপা মহারাণীর দর্শনলাভ আমার ভাগ্যে আর কখনই ঘটিবে না। তাই, এখান হইতে বিদায় হইবার পূর্ব্বে, যে মূর্ত্তিটি একালের বহিয়া মনে হয় না, সেই মূর্ত্তিটি আমার নেত্রের উপর ভাল করিয়া মুদ্রিত করিয়া লইতে আমি অভিলাষী হইয়াছি। ইতপূর্ব্বে আমি এইরূপ রাণীদিগকে কেবল ভারতের পুরাতন ক্ষুদ্র চিত্রপটেই দর্শন করিয়াছি। মহারাণীর নিকট বিদায় লইয়া, এই ব্রাহ্মণগণ্ডির মধ্যেই, মহারাণীর এক ভগিনীর পুত্রদ্বয়ের সহিত সাক্ষাৎ করিতে গেলাম। তাঁহারাই সিংহাসনের ভাবী উত্তরাধিকারী। তাঁহাদের পরেই এই রাজবংশ লোপ পাইবে। উহাদের মধ্যে একজনের পদবী “প্রথম রাজকুমার”, অপরটির পদবী “দ্বিতীয় রাজকুমার”। এই উদ্যানের মধ্যে, তাহাদের পৃথক্‌ আবাসগৃহ। এই যুবকদ্বয়ের উষ্ণীষে মরকতমণির শ্রীপক সংযোজিত। ইহারা ব্যাঘ্রশিকার করেন, ব্রাহ্মণ্যের অনুষ্ঠানাদি করেন, অথচ আধুনিক কালের সমস্ত বিষয়েরই খোঁজখবর রাখেন, এবং সাহিত্য ও ভৌতিকবিজ্ঞানের অনুশীলন করেন। ইহাদের মধ্যে একজন, আমার অনুরোধক্রমে, প্রথমে আমাকে হাওদাখানায় লইয়া গেলেন। সেইখানে হাতীদের সাজসজ্জা ও সরঞ্জাম রক্ষিত। তাহার পর, তাঁহার স্বগৃহীত কতকগুলি ফোটোচিত্র