তাঁহাদিগকে বলিবামাত্রই তাঁহারা গৃহের সমস্ত দ্রব্যাদি আমাদিগকে দেখাইয়া দিলেন; কিন্তু কাহারও গৃহে কোন চোরাই দ্রব্য পাওয়া গেল না। নীচের গৃহ ও দ্বিতলের গৃহ অনুসন্ধান করিয়া, পরিশেষে ত্রিতলে উঠিলাম। এইস্থানে আমাদিগের সাহায্যকারী “হিলি” সাহেব অবস্থিতি করেন। জিজ্ঞাসা করায় জানিতে পারিলাম, দশ এগার দিবস হইতে তিনি সেই গৃহে আছেন। গৃহের ভিতর প্রবেশ করিয়াই একজোড়া জুতা দেখিতে পাওয়া গেল; ঠিক্ এইরূপ একজোড়া জুতা এক টী সাহেবের গৃহ হইতে পূর্ব্বে চুরি গিয়াছিল। সেই গৃহের ভিতর এক গাছি ছড়ি ছিল, তাহাতে সুবর্ণ ও রৌপ্যের কাজ করা; এইরূপ একগাছি ছড়িও অন্য আর একজনের গৃহ হইতে চুরি যায়। তখন দুইজন পুলিস-কর্ম্মচারী দুইখানি গাড়ি লইয়া, যাঁহাদের জুতা ও ছড়ি চুরি গিয়াছিল, সেই দুইজন সাহেবের নিকট গমন করিলেন। সেই সাহেবদ্বয় সেই কথা শুনিবামাত্র তখনই আগমন করিলেন। জুতা ও ছড়ি দেখিয়াই তাঁহারা বলিলেন, “ইহাই আমাদিগের গৃহ হইতে চুরি গিয়াছিল।” তখন আর হিলি সাহেব কোথায় যাইবেন?— তখনই তাঁহার হস্ত লৌহ-অলঙ্কারে শোভিত হইল, এবং সেই গোলযোগের সময় কে একজন আসিয়া, তাঁহার গালে সবলে এক চপেটাঘাত করিল। যখন হিলি দেখিল যে, তাহার আর বাঁচিবার উপায় নাই—সে মালসমেত ধরা পড়িয়াছে, তখন সে সমস্ত স্বীকার করিল। এইটী ইংরাজ চোরের মহৎ গুণ। ইংরাজ চোর যে পর্য্যন্ত মালসমেত ধরা না পড়ে, সে পর্য্যন্ত কাহার সাধ্য—উহার
পাতা:ইংরেজ ডাকাত - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২২
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইংরেজ ডাকাত।
২১