৮ই মার্চ্চ প্রত্যুষে পাঁচটার সময় কলিকাতা হইতে বহির্গত হইলাম। মনে করিলাম, প্রথমে বর্দ্ধমানে গিয়া ট্রেণ হইতে অবতরণ করিব, ও সেইস্থান হইতে প্রত্যেক ষ্টেশনে আগমন পূর্ব্বক ক্রমে হাবড়ায় আসিয়া উপস্থিত হইব। এই কার্য্যে যে কয়েকদিবস অতিবাহিত হইবেক, তাহার মধ্যে আর কলিকাতায় ফিরিব না।
প্রত্যুষে ছয়টার গাড়িতে আরোহণ করিয়া দশটার সময় বর্দ্ধমান ষ্টেশনে অবতরণ করিলাম। দেখিলাম, প্লাটফরমের উপর আমাদিগের এইস্থানের একজন ইংরাজ ইনস্পেক্টর “হাবিৎ” সাহেব ও একজন ইংরাজ কনষ্টেবল “ডালসুরি” সাহেব দণ্ডায়মান। আমাকে দেখিয়াই হাবিৎ সাহেব কহিলেন, “তোম্ কঁহা যাতা হয়”।
আমি। তোমরাও যে কার্য্যে যাইতেছ, আমিও সেই কার্য্যের নিমিত্ত যাইতেছি।
হাবিৎ। এ কালা বাঙ্গালি আছে না, যে তুই ধর্বি; ও ইংরাজ আছে, ও গোরা আছে, উস্কো পাস্ পিস্তল আছে। উস্কো পাকড়না তোমার কাম নেহি হায়, উস্কা পাকড়না হাম্ লোক্কা কাম—সাহেব লোক্কা কাম।
আমি। আচ্ছা সাহেব তুমিই পাক্ড়িও।
হাবিৎ। হাম্ জরুর পাক্ড়েগা। হামরা পেট তোমারা মাফিক মোটা নেহি হ্যায়। আর হাম্ তোমারা মাফিক উস্কো নজদিক্ জাতে ডরতা নেই।
আমি। আমরা বাঙ্গালি, সকল কাজেই আমাদিগের ভয়, তা’তে আবার উহাদিগের নিকট পিস্তল আছে, বলিতেছ।