সাহেবদ্বয় সেই অন্নব্যঞ্জন আহার করিয়া আপন আপন জঠরানল নির্ব্বাপিত পূর্ব্বক পুনঃ পুনঃ সেই রজককে ধন্যবাদ প্রদান করিতে লাগিল। নিতান্ত দয়া-পরবশ হইয়া এই রজক সাহেবদ্বয়কে আহারের সংস্থান করিয়া দিল সত্য কিন্তু থাকিবার কোন বন্দোবস্তই করিল না। সুতরাং অনন্যোপায় হইয়া নিকটবর্ত্তী একটী পুষ্করিণীর ধারে ধরাশয্যায় শয়ন করিয়া, উহাদিগকে ৭ই মার্চ্চ তারিখের সমস্ত দিবস অতিবাহিত করিতে হইল। উহারা যখন দেখিল, সুর্য্যদেব অস্তাচলাবলম্বী হইতেছেন, তখন সেই স্থান পরিত্যাগ পূর্ব্বক নিকটবর্ত্তী দামোদর নদীর অভিমুখে গমন করিল।
এই সকল ব্যাপার জানিতে পারিয়া, আমরাও সেই দামোদর-তীরে গমন করিয়া তাহাদিগের অনুসন্ধান করিলাম, কিন্তু প্রথমে কোনই সংবাদ পাওয়া গেল না। সেই সময় একজন লোক দামোদর পার হইতেছিল; তাহাকে জিজ্ঞাসা করায় সে কহিল যে, দুইজন সাহেবকে ৭ই সন্ধ্যার পর নদীর অপর পার্শ্বে বালির উপর বসিয়া থাকিতে সে দেখিয়াছে।
বর্দ্ধমান জেলার মধ্যে দামোদর একটী প্রসিদ্ধ নদ; কিন্তু উহার জল সকল সময় সমান থাকে না। আমি যে সময়ের কথা বলিতেছি, সেই সময় ঐ নদীতে জল অধিক ছিল না। কোনস্থানে হাঁটু-জল, কোনস্থানে তাহারও কম; কোনস্থানে কোমর-জল, কোনস্থানে বা এক বুক। সকলকেই হাঁটিয়া নদী পার হইতে হয়; সেইস্থানে নৌকা নাই, বা অন্য কোনরূপে পার হইবার উপায়ও নাই। এই নদী হাঁটিয়া পার হইতে হইবে দেখিয়া, আমার সঙ্গী সাহেবদিগের বিশেষ