—মাসে তোমায় দশ টাকা করে দেওয়া হবে তাহলি।
রামকানাই চক্রবর্তী নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলেন না। দশ টাকা! মাসে দশ টাকা আয় তো দেওয়ান মশায়দের মত বড়মানুষের রোজগার! আজ হঠাৎ এত প্রসন্ন হোলেন কেন এঁরা?
রামকানাই কবিরাজ বললেন—দশ টাকা সায়েব মশাই?
—হ্যাঁ, তাই দেওয়া হবে।
রাজারামকে ডেকে ধূর্ত ছোটসাহেব বলে দিলে —এই লোকের কাছে একটা চুক্তি করে লেখাপড়া হোক। দশ টাকা মাসে কবিরাজির জন্যে কুঠির ক্যাশ থেকে দেওয়া হবে। দশটা টাকা দিয়ে দ্যাও এক মাসের আগাম।
—বেশ হুজুর।
পরদিন রামকানাইয়ের আবার ডাক পড়লো নীলকুঠিতে। তার আগের দিন বিকেলে টাকা নিয়ে চলে এসেছেন হ্রষ্টমনে। আজ সকালে আবার কিসের ডাক? দেওয়ান বাজাৱামের সেরেস্তায় গিয়ে হাজিরা দিতে হোল রামকানাইকে। দেওয়ান বললেন—তা হোলে তো আপনি এখন আমাদের লোক হয়ে গেলেন?
রামকানাই বিনীতভাবে জানালেন, সে তাঁদের কৃপা।
—না না, ওসব নয়। আপনি ভাল কবিরাজ। আমাদেরও দরকার। দশ টাকা পেয়েচেন?
—আজ্ঞে হ্যাঁ।
—একটা কথা। সব তে হোলো। নীলকুঠির নুন তো খ্যালেন, এবার যে তার গুণ গাইতি হবে।
—আজ্ঞে মহানুভব বড়সায়েব, ছোটসায়েব আর দেওয়ানজির গুণ, সর্বদাই গাইবো। গরীব ব্রাহ্মণ, যা উপকার আপনারা করলেন—
—ও কথা থাক। সেই খুনের মোকদ্দমায় আপনাকে আমাদের পক্ষে সাক্ষী দিতি হবে। এই উপকারডা আপনি করুন আমাদের।
রামকানাই আকাশ থেকে পড়লেন।—সে কি? সে তো মিটে গিয়েচে,