বাবাজি, তার আবার ঝর্ণা!
চন্দ্র চাটুযো বললেন—পড়ে আছি গু-গোবরের গর্তে, আর দেখিচি কিছু, তুমিও যেমন! বয়েস পঁয়ষট্টির কাছে গিয়ে পোঁছুলো। তুমি সেখানে গিয়েচ বাবাজি?
ভবানী বললেন—আমি পরমহংস মহারাজের কাছে ছ’মাস ছিলাম। তিনিই আমার গুরু। তবে মন্ত্র-দীক্ষা আমি নিই নি, তিনি মন্ত্র দ্যান না কাউকে।
—মহারাজ কোথাকার?
—তা নয়। ওঁদের মহারাজ বলে ডাকা বিধি।
—ও। সেখানে জঙ্গলে খেতে কি?
—আমলকী, বেল, বুনো আম। আর এত আতার জঙ্গল পাহাড়ে! দু’ঝুড়ি দশ ঝুড়ি পাকা আতা জঙ্গলের মধ্যে গাছের তলায় রোজ শেয়ালে খেতো। সুমিষ্ট আতা। তেমন এখানে চক্ষেও দেখেন নি আপনারা।
রূপচাঁদ মুখুয্যে বললেন—তাই বলো বাবাজি, ঈশ্বর বোষ্টমকে সেই হদিসটা দ্যাও দিকি। খুব করে আতা খেয়ে আসি—
চন্দ্র চাটুয্যে বললেন—আরে দূর কর আতা! ওই সব সাধু-সন্ন্যিসির দর্শন পেলে তো ইহজন্ম সার্থক হয়ে গেল। বয়েস হয়েচে আর আতা খেলি কি হবে ভায়া? তারপর বাবাজি—?
—তারপর সেখানে কাটালুম ছ’মাস। সেখান থেকে গেলাম বিঠুর। বাল্মীকি আশ্রমে।
রূপচাঁদ মুখুয্যে বললেন—বাল্মীকি মুনি? যিনি মহাভারত লিখেছিলেন?
দীনু ভচটা্জ বললেন—তবে তুমি সব জানো! বাল্মীকি মুনি মহাভারত লিখতি যাবেন কেন? লিখেছিলেন রামায়ণ।
—ঠিক। তারপর সে আশ্রমেও এক সাধুর সঙ্গে কিছুদিন কাটালাম। রূপচাঁদ বললেন—সেখানে যাবার হদিসটা দ্যাও বাবাজি।
—সে গৃহীলোকের দ্বারা হবে না। বিশেষ করে ঈশ্বর বোষ্টমের সঙ্গে গেলে হবে না। ও আর কতদূর আপনাদের নিয়ে যাবে? বর্ধমান গিয়ে বড় রাস্তা