ধরে আপনারা চলে যান গয়া, সেখান থেকে কাশী। কাশী থেকে যাবেন প্রয়াগ।
মুনি ভরদ্বাজ বসহিঁ প্রয়াগা
যিন্হি রামপদ অতি অনুরাগা
প্রয়াগে সাবেক কালে ভরদ্বাজ মুনির আশ্রম ছিল। কুম্ভমেলার সময় সেখানে অনেক সাধু-সন্ন্যিসি আসেন। আমি গত কুম্ভমেলার সময় ছিলাম। কিন্তু যাওয়া বড় কষ্ট। হেঁটে যেতে হবে আমাদের এতটা পথ। শের শা’ নবাবের রাস্তার ধারে মাঝে মাঝে সরাইখানা আছে, সেখানে যাত্রীরা থাকে, বেঁধে বেড়ে খায়।
রূপচাঁদ মুখুয্যে বললেন—চালডাল?
—সব পাবেন সরাইতে। দোকান আছে। তবে দল বেধে যাওয়াই ভালো। পথে বিপদ আছে।
—কিসের বিপদ?
—সব রকম বিপদ। চোর ডাকাত আছে, ঠগী আছে। বর্ধমান ছাড়িয়ে গয়া পর্যন্ত সারা পথে দারুণ বন পাহাড়। বড় বড় বাঘ, ভাল্লুক এ সব আছে।
—ও বাবা!
ঈশ্বর বোষ্টম বললে—উনি ঠিকই বলেচেন। সেবার খাব্রাপোতা থেকে একজন যাত্রী গিয়েছিল গয়ায় যাবে বলে। ওদিকের এক জায়গায় সন্দেবেলা তিনি বললেন, হাতমুখ ধুতি যাবো। আমার কথা শোনলেন না। আমরা এক গাছতলায় চব্বিশজন আছি। তিনি মাঠের দিকে পলাশ গাছের ঝোপের আড়ালে ঘটি নিয়ে চললেন। বাস্! আর ফিরলেন না। বাঘে নিয়ে গেল।
সবাই একসঙ্গে বলে উঠলেন—বলো কি!
—হ্যাঁ। সে রাত্তিরি কি মুস্কিল। কান্নাকাটি পড়ে গেল। সকালে কত খুঁজে তেনার রক্তমাখা কাপড় পাওয়া গেল মাটির মধ্যে। তাঁরে টান্তি টান্তি নিয়ে গিইছিল, তার দাগ পাওয়া গেল।
রূপচাঁদ বললেন—সর্বনাশ!
এমন সময় দেখা গেল নালু পাল এদিকে আসচে। নালু পালকে একটা খেজুর পাতার চাটাই দেওয়া গেল বসতে, কারণ সে আজকাল বড় দোকান