—আপনি এ সব শিখলেন কোথায়?
—বাংলা দেশে এর চর্চা নেই। এখানে এসে দেখচি শুধু মঙ্গলচণ্ডীর গীত আর মনসার ভাসান আর শিবের বিয়ে এই সব। বড় জোর ভাষা রামায়ণ মহাভারত। এ আমি জেনেছিলাম হৃষিকেশ পরমহংসজির আশ্রমে, পশ্চিমে। তাঁর আর এক শিষ্য ওই যে সেবার এসেছিলেন তোমরা দেখেচ আমার চোখ খুলে দিয়েছেন তিনি। তিনি আমার গুরু এই নেই। মন্ত্র দেননি বটে তবে চোখ খুলে দিয়েছিলেন। আমি তখন জানতাম না, কলকাতায় রামমোহন রায় বলে একজন বড় লোক আর ভাবী পণ্ডিত লোক নাকি এই উপনিষদের মত প্রচার করেছিলেন। তাঁর বইও নাকি আছে। সর্ব শুভকরী কাগজে লিখেছে।
—ও সব খৃষ্টানী মত। বাপ-পিতেমো যা করে গিয়েছে
—নিলু, বাপ-পিতামহ কি করেচেন তুমি তার কতটুক জানো? উপনিষদের ধর্ম ঋষিদের তৈরি তা তুমি জানো? আচ্ছা, এসব কথা আজ থাক। রাত হয়ে যাচে।
—না বলুন না শুনি-বেশ লাগছে।
—তোমার মধ্যে বুদ্ধি আছে, তোমার দিদির চেয়েও বেশি বুদ্ধি আছে। কিন্তু তুমি একেবারে ছেলেমানুষি করে দিন কাটাচ্চ।
বিলু বললে—ওসব রাখুন। আপনি কাঁটাল খান। আমরা কাল থেকে লেখাপড়া শিখব। দিদির সঙ্গে একসঙ্গে বসে কিন্তু বলবেন আপনি আলাদা না।
—নিলু ততক্ষণ একটা পাথরের খোরায় কাঁটাল ভেঙে স্বামীর সামনে রাখলো।
ভবানী বললেন—এত গুলো খাবো?
নিলু মাত্র দুটি কোষ তুলে নিয়ে বললে—বাকিগুলো সব খান। কদমার কাঁটাল। কি মিষ্টি দেখুন। নাগর না খেলি আমাদের ভালো লাগে, ও নাগর? এমন মিষ্টি কাঁটাল আপনি খাবেন না? খান খান, মাথার দিব্যি।
বিলু বললে-কাঁটাল খেয়ে না, একটা বিচি খেয়ে নেবেন নুন দিয়ে। আর কোনো অসুখ করবে না। ওই রে! খোকন কেঁদে উঠলো দিদির ঘরে। দিদি
১৩৬