পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চোখ বাজে—তবে কালই —

 জগদম্বা অপ্রসন্ন সুরে বললেন-ও আবার কি কথা? শনিবারের সন্ধ্যেবেলা? দুর্গা দুর্গারাম রাম! অমন কথা বলবার নয়।

 —তিলুরা এসেছিল কেউ?

 —নিল খোকাকে নিয়ে এসেছিল। খোকা আমাকে গাল টিপে টিপে কত আদর করলে। আহা, ওই চাঁদটুকু হয়েছে, বেঁচে থাক। ওদের সবারি সাধআহ্লাদের সামগ্রী। একটু ছানা খেতি দেলাম। বেশ খেলে টুকটুক করে।

 —ছানা খেতি দিও না, পেট কামড়াবে॥

 কথা শেষ হবার আগেই তিলু খোকাকে নিয়ে এসে হাজির। খোকা বেশ বড় হয়ে উঠেচে। ওর বাবার বুদ্ধি পেয়েচে। রাজারামকে দু’হাত নেড়ে বললে—বড়দা-

 রাজারাম খোকাকে কোলে নিয়ে বললেন-বড়দা কি মণি, মামা হই যে?

 খোকা আবার বললে-বড়দা।

 তার মা বললে~~-ঐ যে তোমাকে আমি বড়দা বলি কিনা? ও শুনে শুনে ঠিক করেচে এই লোকটাকে বড়দা বলে।

 খোকা বললে-বড় রাজারাম খোকার মুখে চুমু খেয়ে বললেন-তোমার মা’বও বড়দা হলাম, আবার তোমারও বড়দা বারা? ভবানী কি করচে। ন

 তিলু বললে—উনি আর চন্দর মামা বসে গল্প করছেন, আমি কাঁটাল ভেঙ্গে দিয়ে এলাম খাবাব জন্যি, নিতে এসেছিলাম একটা ঝুনো নারকোল। ওঁরা মুড়ি খেতি চাইলেন ঝুনো নারকেল দিয়ে-

 নিয়ে যা তোর বৌদিদির কাছ থেকি। একটা ছাড়া দুটো নিয়ে যা-

 এই সমযে জগদম্বা জানালার কাছে গিয়ে বললেন—ওগো, তোমারে কে বাইরে ডাকছে —

 —কেডা?

 —তা কি জানি। গোপাল মাইন্দার বলচে।

১৪৩