গেল লড়াই। তার পর আমরা সব চলে এলাম।
নীলমণি সমাদ্দার তামাক খেতে খেতে বললেন -আমরা সব ভেবে খুন। না জানি কি মস্ত লড়াইয়ের মধ্যি গেল রাজারাম দাদা। আরে তুমি হোলে গিয়ে গাঁয়ের মাথা। তুমি গাঁয়ে না থাকলি মন ভালো লাগে? শাম বাগদির বড় মেয়ে কুসুম বেরিয়ে গেল ওর ভগ্নিপতির সঙ্গে। মামুদপুর থেকে ওর বাবা ওরে ধরে নিয়ে এল। তার বিচের ছিল পরশু। তুমি না থাকতি হোলো না। আজ আবার হবে শুনছি।
সন্ধ্যাবেলা এল শাম বাগদি ও তার মেয়ে কুসুম। রাজারাম বললেন-কি গা শাম?
—মেয়েডারে নিয়ে এ্যালাম কর্তাবাবুর কাছে। যা হয় বিচের করুন।
রাজারাম বিজ্ঞ বিষয়ী লোক, হঠাৎ কোনো কথা না বলে বললেন-তোর মেয়ে কোথায়?
—ওই যে আড়ালে দাড়িয়ে। শোন ও কুসী-
কুসুম সামনে এসে দাড়ালো, আঠারো থেকে কুড়ির মধ্যে বয়েস, পূর্ণযৌবনা নিটোল, সুঠাম দেহ-এক ঢাল কালো চুল মাথায়, কালো পাথরে কুঁদে তৈরি করা চেহারা, আশ্চর্য সুন্দর চোখ দুটি। মুখখানি বেশ, রাজারাম কেবল গয়া মেমকেই এত সুঠাম দেখেছেন। মেয়েটার চোখে ভারি শান্ত, সরল দৃষ্টি।
রাজারাম ভাবলেন, বেশ দেখচি যে! ধুকড়ির মধ্যে খাসা চাল। বড়সায়েব যদি একবার দেখতে পায় তাহলে লুফে নেয়।
—নাম কি তোর?
—কুসুম।
—কেন চলে গিইছিলি রে?
কুসুম নিরুত্তর।
—বাবার বাড়ি ভালো লাগে না কেন? কুসুম ভয়ে ভয়ে চোখ তুলে রাজারামের দিকে চেয়ে বললে-মোরে পেট পরে খেতি দেয় না সৎমা। মোরে বকে, মারে। মোর ভগিনপোত বললে-