পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কোথাও থাকেন না উনি? বিলু ও নিলু বার বার ওদের ঘর থেকে এসে জিগ্যেস করছে। এমন সময় নিলু বাইরের দিকে উঁকি মেরে বললে-ঐ যে মূর্তিমান আসছেন।

 তিলু বললে—শরীর ভালো আছে দেখচিস তো রে?

 —ব’লে তো মনে হচ্চে। বলি ও নাগর, আবার কোন্ বিন্দেবলীর কুঞ্জে যাওয়া হয়েছিল শুনি? বড়দিকে কি আর মনে ধরছে না? আমাদের না হয় না-ই ধরলো-

 ভবানী এগিয়ে এসে বললেন-তোমরা সবাই মিলে এমন করে তুলেচ যেন আমি সুন্দরবনের বাঘের পেটে গিয়েচি। রাত্রে বেড়াতে বেরোবার জো নেই? রামকানাই কবিরাজের বাড়ি ছিলাম।

 বিলু বলে—সেখানে কি আজকাল গাঁজার আড্ডা বসে নাকি?

 নিলু বললে-নইলি এত রাত অবধি সেখানে কি হচ্ছিল?

 তিলু বোনেদের আক্রমণ থেকে স্বামীকে বাঁচিয়ে চলে। কোনোরকমে ওদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ঘরে পাঠিয়ে দিয়ে স্বামীর হাত-পা ধোবার জল এনে দিলে। বললে-পা ধুয়ে দেবো? পায়ে যে কাদা!

 ওই মাল্‌সি কাঁটালতলার কাছে ভীষণ কাদা।

 —কি খাবেন?

 —কিছু না। চিড়ে খেয়ে এসেচি কবিরাজের বাসা থেকে।

 —না খেলি হবে না। ওবেলার চালকুমড়োর সুক্তুনি বাখতি বলেছিলেন -রয়েছে। সে কে খাবে? এক সরা সুক্তনি রেখে দিইছিল নিলু। ও বড্ড ভালোবাসে আপনাকে-

 —আচ্ছা, দাও। খোকনকে কি খাইয়েছিলে?

 —দুধ,

 —কাসি আর হয়নি?

 —শুঁঠ গুঁড়ো গরমজলে ভিজিয়ে খেতি দিইচি।

 ভবানী বাঁড়ুয্যে খেতে বসে তিলুকে সব কথা বললেন। তিলু শুনে বললে

১৭১