অর্থাৎ আমায় জোর করে নিয়ে যাচ্চে তোমার কোল থেকে। ভবানী জানেন খোকা এই কথাটি আজ অল্পদিন হোলো শিখেচে, এ কথাটা বড্ড ব্যবহার করে। বললেন-থাক আমার কাছে, ওকে একটু বেড়িয়ে আনি মহাদেব মুখুয্যের চণ্ডীমণ্ডপ থেকে।
নিলু বললে- মাছটার কি করবো বলে যান-
—যা হয় কোরো। তিলু কোথায়?
—বড়ি দিতি গিয়েচে বড়দার বাড়ির ছাদে। আপনার বাড়ির তো আর ছাদ নেই, বড়ি দেবে কোথায়? কবে কোঠা করবেন।
—যাও না দাদাকে গিয়ে বলো না, কুলীন কুমারী উদ্ধার করেছি, কিছু টাকা বার করতে লোহার সিন্দুক থেকে। দোতলা কোঠা তুলে ফেলচি। বিয়ে যদি না করতাম, থাকতে থুবড়ি হয়ে, কে বিয়ে করতো?
—এর চেয়ে আমাদের দাদা গলায় কলসী বেঁধে ইছামতীর জলে ডুবিয়ে দিলি পারতেন। কি বিয়েই দিয়েচেন-আহা মরি মরি! বুড়ো বর, তিন কাল গিয়েছে, এককালে ঠেকেচে-
—বিয়ে দিলেই পারতেন তো যুবো বর ধরে। তবে খুবড়ি হয়ে ঘরে ছিলে কেন এতকাল? উদ্ধার হোলেই তো পারতে। আমি পায়ে ধরে তোমাদের সাধতে গিয়েছিলাম?
—কান মলে দেবে আপনার-
বলেই নিলু ক্ষিপ্রবেগে হাত বাড়িয়ে স্বামীর কানটার অস্বস্তিকর সান্নিধ্যে নিয়ে এসে হাজির করতেই বিলু ধমক দিয়ে বলে -এই। কি হচ্ছে?
নিলু ফিক ক’রে হেসে মাছটা নিয়ে ছুটে পালালো। ভবানী খোকাকে নিয়ে পথে বার হয়েই বললেন—কোথায় যাচ্চি বল তো?
খোকা ঘাড় নেড়ে বললে— যাই -
—কোথায়?
—মাছ।
মহাদেব মুখুয্যের চণ্ডীমণ্ডপে যাবার পথে একটা বাবলাগাছের ওপর লতার
১৯৩
ইছামতী-১৩