বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ভবানী বললেন—কি রে খোকা, কি বলচিস?

 —আচিনি।

 —কি আসিনি রে? কি আসবে?

 —চান।

 —চাঁদ এখন কি আসে বাবা? সে আসবে সেই রাত্তিরে। চলো।

 —খোকা ভয়ের সুরে বললে—ছিয়াল।

 —না, কোনো ভয় নেই—শেয়াল নেই।

 —ও বাবা!

 —কি?

 —মা—

 —চলো যাবে। মা এখন বাড়ী নেই, আসুক। আমরা যেখানে যাচ্চি, সেখানে কি খাবি রে?

 —মুকি।

 —বেশ চলো—কি খাবি?

 —মুকি।

 মহাদেব মুখুয্যের চণ্ডীমণ্ডপে অনেক লোক জুটেচে, ভবানীকে দেখে ফণি চক্কত্তি বলে উঠলেন—আরে এসো বাবাজী, সকালবেলাই যে! খোকনকে নিয়ে বেরিয়েচ বুঝি? একহাত পাশা খেলা যাক এসো—

 ভবানী হাসতে হাসতে বললেন—বেশিক্ষণ বসব না কাকা। আচ্ছা, খেলি এক হাত। খোকা বড্ড দুষ্টুমি করবে যে! ও কি খেলতে দেবে?

 মহাদেব মুখুয্যে বললেন—খোকাকে বাড়ীর মধ্যে পাঠিয়ে দিচ্চি দাঁড়াও, ও মুংলি—মুংলি—

 —না থাক, কাকা। ও অন্য কোথাও থাকতে চাইবে না। কাঁদবে।

 চণ্ডীমণ্ডপ হচ্চে পল্লীগ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান। এইখানেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিষ্কর্মা, ব্রহ্মোত্তর বৃত্তিভোগী, মূর্খ ব্রাহ্মণের দল জুটে কেবল তামাক পোড়ায় আর দাবা পাশা (তাসের প্রচলন এ সব পাড়াগাঁয়ে আদৌ নেই, ওটা

১৯৮