মারবে, লাঠি নিয়ে তৈরী আছে। আমি জানি কথাটা তাই বললাম। অনেকক্ষণ থেকে আপনার জন্যি দাঁড়িয়ে আছি।
—কে কে আছে দলে?
—তা জানিনে বাবু। আমি গরীব লোক। কানে আমার কথা গেল, তাই বলি, অধর্ম করতি পারবো না। ভগবানের কাছে এর জবাব দিতি হবে তো একদিন? আপনি ব্রাহ্মণ, আপনাকে সাবধান করে দেবার ভার তিনিই দিয়েচেন আমার ওপর।
তবুও রাজারাম ঘোড়া নিয়ে এগিয়ে যেতে উদ্যত হয়েচেন দেখে রামকানাই কবিরাজ হাতজোড় করে বললে—দেওয়ানবাবু, আমার কথা শুনুন—বড্ড বিপদ আপনার। মোটে এগোবেন না—বাবু শুনুন—ও বাবু কথাটা—
ততক্ষণে রাজরাম অনেকদূরে এগিয়ে চলে গিয়েছেন। মনে মনে ভাবতে লাগলেন, রামকানাই লোকটা মাথা-পাগলা নাকি? এত অপমান হোলো নীলকুঠির লোকের হাতে, তিনিই তার মূল—অথচ কি মাথাব্যথা ওর পড়েছিল তাঁকেই সাবধান করে দিতে? মিথ্যে কথা সব।
ষষ্ঠীতলার মাঠে তাঁর ঘোড়া পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপদ শুরু হোলো। মস্ত বড় একটি দল লাঠি-সোঁটা নিয়ে তাঁকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেললে। রাজারাম দেখলেন এদের মধ্যে বাঁধালের দাঙ্গায় নিহত রামু বাগ্দির বড় ছেলে হারু আর তার শালা নারান বড় সর্দার।
পলকে প্রলয় ঘটলো। একদল চেঁচিয়ে হেঁকে বললে—ও ব্যাটা, নাম এখানে। আজ তোরে আর ফিরে যেতি হবে না—
নারান বললে—ও ব্যাটা সাহেবের কুকুর—তোর মুণ্ডু নিয়ে আজ ষষ্ঠীতলার মাঠে ভাঁটা খেলবো দ্যাখ,—
অনেকে একসঙ্গে চেঁচিয়ে বললে—অত কথায় দরকার কি? ঘাড় ধরে নামা—নেমিয়ে নিয়ে বুকে হাঁটু দিয়ে জেঁকে বসে কাতানের কোপে মুণ্ডুটা উড়িয়ে দে—
হারু বললে—তোরা সর্—মুই দেখি—মোর বাবারে ওই শালা ঠেঙিয়ে