আচ্ছা, মশাটা কি সত্যি ওর গায়ে বসেছিল?
রামকানাই কবিরাজ সকালে উঠে ইছামতীতে স্নান ক’রে আসবার সময় দেখলেন কি চমৎকার নাক-জোয়ালে ফুল ফুটেছে নদীর ধারের ঝোপের মাথায়। বেশ পূজো হবে। বড় লোভ হোলো রামকানাইয়ের। কাঁটার জঙ্গল ভেদ করে অতি কষ্টে ফুল তুলে রামকানাইয়ের দেরি হয়ে গেল নিজের ছোট্ট খড়ের ঘরে ফিরতে।
রামকানাই রোজ প্রাতঃস্নান করে এসে পূজো ক’রে থাকেন গ্রাম্য-কুমোরের তৈরি রাধাকৃষ্ণের একটা পুতুল। ভালো লেগেছিল বলে ভাসানপোতার চড়কের মেলায় কেনা। বড় ভালো লাগে ঐ মূর্তির পায়ে নাক-জোয়ালে ফুল সাজিয়ে দিতে, চন্দন ঘষে মূর্তির পায়ে মাখিয়ে দিতে, দু’একটা ধূপকাঠি জ্বেলে দিতে পুতুলটার আশেপাশে। নৈবেদ্য দেন কোনো দিন পেয়ারা কাটা, কোনো দিন পাকা পেঁপের টুকরো, এক ভেলা খাঁড় আখের গুড়।
পূজো শেষ করবার আগে যদি কেউ না আসে তবে অনেকক্ষণ ধরে পূজো চলে রামকানাইয়ের। চোখ চেয়ে এক-একদিন জলও পড়ে। লাজুক হাতে মুছে ফেলে দেন রামকানাই।
কে বাইরে থেকে ডাকলে—কবিরাজ মশাই ঘরে আছেন?
—কে? যাই।
—সবাইপুরির অম্বিক মণ্ডলের ছেলের জ্বর। যেতি হবে সেখানে।
—আচ্ছা আমি যাচ্ছি -বোসো।
পূজো-আচ্চা শেষ করে প্রসাদ নিয়ে বাইরে এসে রামকানাই সেই লোকটার হাতে কিছু দিলেন।
—কি অসুখ?
—আজ্ঞে, জ্বর আজ তিন দিন।
—তুমি চলে যাও, আমি আরো দুটো রুগী দেখে যাব এখন—
রামকানাই দুটুকরো শসা খেয়ে রোগী দেখতে বেরিয়ে পড়েন। নানা