—তিন-এর পর এক ফাঁক, চারের পর এক ফাঁক।
—তা কেন? সাত-এর পর, আটের পর হলি হবে না?
—আজ্ঞে তাও হবে।
—তাই বল। আজ একটা রুগী দেখলাম, সাতের পর ফাঁক। সেখান থেকেই এ্যালাম।
—বাঁচলো?
—স্বয়ং ধন্বন্তরির অসাধ্য—কৃতি সাধ্যা ভবেৎ সাধ্য—সুশ্রুতে বলচে। বাবা, একটা কথা বলি। কবিরাজি তো পড়বার জন্যি এসেচ। শরীরে কোনো দোকু রাখবা না। মিথ্যে কথা বলবা না। লোভ করবা না। অল্পে সন্তুষ্ট থাকবা। দুঃখী গরিবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করবা। ভগবানে মতি রাখবা। নেশাভাঙ করবা না। তবে ভালো কবিরাজ হতি পারবা। আমার গুরুদেব (উদ্দেশে প্রণাম করলেন রামকানাই) মঙ্গলগঞ্জের গঙ্গাধর সেন কবিরাজ সর্বদা আমাদের একথা বলতেন। আমি তাঁর বড় প্রিয় ছাত্র ছেলাম কিনা। তাঁর উপযুক্ত হই নি। আমরা কুলাঙ্গার ছাত্র তাঁর। নাড়ি ধরে যাকে যা বলবেন তাই হবে। বলতেন মন পবিত্র না রাখলি নাড়িজ্ঞান হয় না। কিছু খাবি?
ছাত্র সলজ্জমুখে বললে—না, গুরুদেব।
—তোর মুখ দেখে মনে হচ্চে কিছু খাস নি। কিবা খেতি দি, কিন্তু নেই ঘরে—একটা নারকোল আছে, ছাড়া দিকি!
—দা আছে?
—ঐ বটকৃষ্ণ সামন্তদের বাড়ি থেকে নিয়ে আয়, ওই নদীর ধারে বাঁশতলায় যে বাড়ি, ওটা। চিনতি পারবি, না সঙ্গে যাবো?
—না, পারবো এখন—
গুরুশিষ্য কাঁচা নারকোল ও অল্প দুটি ভাজা কড়াইয়ের ডাল চিবিয়ে খেয়ে অধ্যয়ন-অধ্যাপনা কাজে মন দিলে—বেলা দ্বিপ্রহর পর্যন্ত, ছাত্রের যদি বা হুঁশ থাকে তো গুরুর একেবারে নেই। ‘মাধব নিদান’ পড়াতে পড়াতে এল চরক, চরক থেকে এল কলাপ ব্যাকরণ, অবশেষে এসে পড়ে শ্রীমদ্ভাগবত। রাম-