পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 হেমন্তের প্রথমে একদিন বিকালে শিপ্‌টন্‌ সাহেব ডাকালে হরকালী সুরকে। বললে—ডেওয়ান, গোলমাল হইলো—

 —কি সায়েব?

 —এবার নীলকুঠি উঠিলো—

 —কেন হুজুর? আবার কোনো গোলমাল—

 —কিছু না। সে গোলমাল আছে না। না, এ অন্য গোলমাল আছে। এক ডেশ আছে জার্মানি, টুমি জানে? ও ডেশ হইটে নীল রং ইণ্ডিয়ায় আসিলো, সব দেশে বিক্রয় হইলো।

 —সে দেশে কি নীলের চাষ হচ্ছে হুজুর?

 —সে কেন? টুমি বুঝিলে না। কেমিকাল নীল হইটেছে—আসল, নীল নয়, নকল নীল। গাছ হইটে নয়—অন্য উপায়ে —by synthetic process—টুমি বুঝিবে না।

 —ভালো নীল?

 —চমট্‌কার। আমি সেইজন্যই টোমাকে ডাকাইলাম—এই ডেখো—

 হরকালী সুরের সামনে শিপ্‌টন্ একটা নীল রংয়ের বড়ি রেখে দিলে। অভিজ্ঞ হরকালী সেটা নেড়েচেড়ে দেখে সেটার রং পরীক্ষা করে অবাক হয়ে গেল। কিছুক্ষণ কোনো কথা বললে না।

 —ডেখিলে—

 —হাঁ সায়েব।

 -এ রং চলিলে আমাদের নীল রং কেন লোক কিনিবে?

 —এর দাম কত?

 শিপ টন্ হেসে বললে—টাহা আগে জিজ্ঞাসা করিলে না কেন? আমি ভাবিটেছি ডেওয়ানের কি মাথা খারাপ হইতেছে? কত হইটে পারে?

 —চার টাকা পাউণ্ড।

 —এক টাকা পাউণ্ড, জোর ডেড় টাকা পাউণ্ড। হোলসেল হাণ্ড্রেড-ওয়েট

২৪৫