বললে-কি এটা?
—মুক্তো।
—মুক্তো কি মা?
—ঝিনুকের মধ্যি থাকে।
নিস্তারিণী খোকাকে কোলে নিয়ে বললে-ওকে আমি এটা দিয়ে দিতে পারি, দিদি।
—না, ও কি করবে ওটা ভাই?
—সত্যি, দেবো? ওর মুখ দেখলি আমি সব যেন ভুলে যাই—
তিলু নিস্তারিণীকে অতি কষ্টে নিবৃত্ত করলে। নিস্তারিণী খুব সুন্দরী নয় কিন্তু ওর দিক থেকে হঠাৎ চোখ ফেরানো যায় না। গ্রাম্যবধুর লজ্জা ও সংকোচ ওর নেই, অনেকটা পুরুষালি ভাব, ছেলেবেলায় গাছে চড়তে আর সাতার দিতে পটু ছিল খুব। ওর আর একটা দোষ হচ্চে কাউকে বড় একটা ভয় করে না, শাশুড়ীকে তো নয়ই, স্বামীকেও নয়।
তিলু ওকে ভালোবাসে। এই সমস্ত গ্রামের কুসংস্কারাচ্ছন্ন, মূর্খ, ভীরু গতানুগতিকতা এই অল্পবয়সী বধূকে তার জালে জড়াতে পারে নি। এ যেন অন্য যুগের মেয়ে, ভুল ক’রে অর্ধশতাব্দী পিছিয়ে এসে জন্মেচে।
তিলু বললে-কিছু খাবি?
一না।
—খই আর শসা?
—দ্যাও দিনি। বেশ লাগে।
এই নিস্তারিণীকেই একদিন তিলু অদ্ভুতভাবে নদীর ধারে আবিষ্কার করলে কোপের আড়ালে রায়পাড়ার কৃষ্ণকিশোর রায়ের ছেলে গোবিন্দর সঙ্গে গোপনীয় আলাপে মত্ত অবস্থায়।
তিলু গিয়েছিল খোকাকে নিয়ে নদীতে গা ধুতে। বিকেলবেলা, হেমন্তের প্রথম, নদীর জল সামান্য কিছু শুকুতে আরম্ভ করেচে, শুকনো কালো ঘাসের
২৫২