জগদ্ধাত্রীর মত। এতটুকু অনিয়ম, এতটুকু অসুবিধে হবার জো নেই।
রোজ ভবানী বাঁড়ুয্যে একটু ধ্যান করেন। তাঁর সন্ন্যাসী-জীবনের অভ্যাস এটি, এখনো বজায় রেখেচেন। তিলু বলে দিয়েছে,—ঠাণ্ডা লাগবে, সকাল করে ফিরবেন। একদিন ফিরতে দেরি হওয়াতে তিলু ভেবে নাকি অস্থির হয়ে গিয়েছিল। বিলু নিলু ছেলেমানুষ ভবানী বাঁড়ুয্যের চোখে, ওদের তিনি তত আমল দিতে চান না। কিন্তু তিলুকে পাবার জো নেই।
সেদিন বেরুতে যাচ্চেন ভবানী, নিলু এসে গম্ভীর মুখে বললে—দাঁড়ান ও রসের নাগর, এখন যাওয়া হবে না—
—আচ্ছা, ছ্যাবলামি করো কেন বলো তো? আমার বয়েস বুঝে কথা কও নিলু।
—রসের নাগরের আবার রাগ কি!
নিলু চোখ উল্টে কুঁচকে এক অদ্ভুত ভঙ্গি করলে।
ভবানী বললেন—তোমাদের হয়েচে কি জানো? বড়লোক দাদা, খেয়েদেয়ে আদরে-গোবরে মানুষ হয়েচো। কর্তব্য-অকর্তব্য কিছু শেখোনি। আমার মনে কষ্ট দেওয়া কি তোমার উচিত? যেমন তুমি, তেমনি বিলু। দুজনেই ধিঙ্গি, ধুরন্ধর। আর দেখ দিকি তোমাদের দিদিকে?
—ধিঙ্গি, ধুরন্ধর—এসব কথা বুঝি খুব ভালো?
—আমি বলতাম না। তোমরাই বলালে!
—বেশ করেচি। আরও বলবো।
—বলো। বলচই তো। তোমাদের মুখে কি বাধে শুনি?
এমন সময়ে তিলু একরাশ কাপড় সাজিমাটি দিয়ে কেচে পুকুরঘাট থেকে ফিরচে দেখা গেল। পেয়ারাতলায় এসে স্বামীর কথার শেষের দিকটা ওর কানে গেল। দাঁড়িয়ে বললে—কি হয়েচে?
ভবানী বাঁড়ুয্যে যেন অকূলে কূল পেলেন। তিলুকে দেখে মনে আনন্দ হয়। ওর সঙ্গে সব ব্যাপারের একটা সুরাহা আছে।
—এই দ্যাখো তোমার বোন আমাকে কিসব অশ্লীল কথা বলচে!