তিলু বললে-খোকা, ভগবানের কথা কি শুনলি?
খোকা মায়ের কাছে সরে এসে মা’র মুখের দিকে চেয়ে বললে- মা, ওমা, তামি চান করবো, আমি চান করবো।—
—আমার কথার উত্তর দে-
—আমি চান করবো।
তিলু এদিক ওদিক চেয়ে হেসে বললে-খোকাকে গা ধুইয়ে নেবো, আমরাও নামি জলে। আসুন সাঁতার দেবো।
ভবানী বললেন-বসো তিলু। আমার কেমন মনে হচ্ছিল আজ। খোকাকে ভগবানের কথা শেখাচ্ছিলাম। মনে হচ্ছিল এই আকাশবাতাস নদীজলের পেছনে তিনি আছেন। এই খোকার মধ্যেও। ওকে আনন্দ দিয়ে আমি ভাবি তাকেই খুশী করছি।
তিলু স্বামীর কথা মন দিয়ে শুনলে, বেশ গভীর ভাবে। ও স্বামীর কোনো কথাই তুচ্ছ ভাবে না। ঘাড় হেলিয়ে বললে-আপনার ব্রহ্মের অনুভূতি হয়েছিল?
—তুমি হাসালে।
—তবে ও অনুভূতিটা কি বলুন।
—তাঁর ছায়া এক-একবার মনে এসে পড়ে। তাকে খুব কাছে মনে হয়। আজ যেমন মনে হছিল-আমি তাঁর আপন, পর নই। তিনি যত বড়ই হোন, বিরাটই হোন, আমাদের পর নয়, আমাদের বাবা তিনি। ‘দিব্যোহ্যমূর্ত পুরুষঃ’-মনে আছে তো?
—ওই তো ব্রহ্মানুভূতি। আপনার ঠিক হয়েচে আমি জানি। যাতে ভগবানকে অত কাছে বলে ভাবতি পারলে, তাকে ব্রহ্মানুভূতি বলতি হবে বই কি?
—রোজ নদীর ধারে বসে খোকাকে ভগবানের কথা শেখাবো। এই বয়েস থেকে ওর মনে এসব আনা উচিত। নইলে অমানুষ হবে।
—আপনি যা ভালো বোঝেন। চলুন, এখন নেয়ে একটু সাঁতার দিয়ে
২৬৭