পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 নিলু বললে- এখন কান মলে দেবো। যে-

 —দূর। তুই যে কি বলিস কাকে, ছি! ও-কথা বলতে আছে?

 বিলু আড়াল থেকে বার হয়ে এসে খিলখিল করে হেসে উঠলো। ভবানী বিরক্তির সুরে বললেন -আর এই এক নষ্টের গোড়া। কি যে সব হাসে! যা-তা মুখে কথাবার্তা তোমাদের দুজনের, বাধে না। ছিঃ!

 বিলু বললে-অত, ছিঃ ছিঃ করতে হবে না বলে দিচ্চি-

 নিলু বললে –হ্যাঁ। আমরা অত ফেলনা নাই যে সব্বদা ছিছিক্কাব শুনতে হবে।

 তিলু বললে - আপনি কিছু মনে করবেন না। ওরা বড় আদুরে আর আর ছেলেমানুষ- দাদা ওদের কক্ষনো শাসন করতেন না। আদর দিয়ে দিয়ে মাথায় তুলেচেন-

 নিলু বললে- হ্যাঁ গো বৃন্দে। তোমাকে আর আমাদের বাগানে কত্তে হবে না, থাক।

 বিলু বললে- দিদি সুয়ো হচ্চে ভাতারের কাছে, বুঝলি না?

 ভাবানী বললে- ছিঃ ছি:, আবার অশ্লীল বাক্য।

 বিলু রাগের স্বরে বললে- হ্যাঁ গো সব অশ্লীল কথা আর অশ্লীল বাক্য। তবে কি কথা বলবে শুনি? দুটো কথা বলেচো কি না, অমনি অশ্লীল বাক্য হয়ে গেল! বেশ করবো আমরা অশ্লীল বাক্য বলবো। আপনি কি করবেন শুনি?

 তিলু ধমকে বললে, যা এখান থেকে। দুজনেই যা। পান নিয়ে এসো।

 —আর মুগাতক্তি দেবে? কেমন লাগলো? বৌদিদি আপনার জন্যে মুগতক্তি রসে ফেলচে। ভাত খাবার সময় দেবে।

 —একটা কথা বলি তিলু-

 —কি?

 —কেউ নেই তো এখানে? দেখে এসো।

 —না, কেউ নেই। বলুন-

 —কাল একবার আমার সঙ্গে বটতলায় যেতে পারবে?

 —কেন?

২৮