সেও অভিজ্ঞ লোক, আইন আদালত জমিদারি কাছারীর গতিক এবং নাড়ী বিলক্ষণ জানে। কেন আমীনবাবু বেঁকে দাঁড়িয়েচে তাকে বোঝাতে হবে না।
প্রসন্ন চক্কত্তি অপ্রসন্ন মুখে বললে—না না, সে হবে না। তোমরা নায়েবের কাছেই যাও—আমার কাজ এখনো মেটে নি। দেরি হবে দশ-পনেরো দিন।
মোড়ল মশাই হাতজোড় করে বললে—তা মোদের উপর রাগ করবেন না আমীন মশাই। ছ’পয়সা করে মাথা-পিছু দেবানি—
—ছ’আনার এক কড়ি কম হলি পারবো না।
—গরীব মরে যাবে তাহলি—
—না। পারবো না।
বাধ্য হয়ে দশজন প্রজার পাঁচসিকে মোড়ল মশাইকে ভালো ছেলের মত সুড়সুড় করে এগিয়ে দিতে হোলো প্রসন্ন চক্কত্তির হাতে। পথে এসো বাপধন। চক্কত্তিকে আর কাজ শেখাতি হবে না ঘনশ্যাম চাকলাদারের। কি করে উপরি রোজগার করতে হয়, নীলকুঠির আমীনকে সে কৌশল শিখতে হবে পচা জমিদারি কাছারীর আমলার কাছে? শাসন করতে এসেছেন! দেখেচিস শিপ্টন্ সাহেবকে?
বেলা তিন প্রহর। ঘনশ্যাম চাকলাদার আবার ডেকে পাঠালেন প্রসন্ন চক্কত্তিকে। ঘনশ্যাম নায়েব অত্যন্ত কর্মঠ, দুপুরে ঘুম অভ্যেস নেই, গিদে বালিশ বুকে দিয়ে জমার খাতা সই করবেন, পেশ্কার কাছে দাঁড়িয়ে পাতা উল্টে দিচ্চে। ফর্সিতে তামাক পুড়চে।
প্রসন্ন চক্কত্তির দিকে চেয়ে বললে—ওদের চিঠা দিয়ে দেলেন?
—আজ্ঞে হাঁ।
—ঘোড়া চড়তি পারেন?
—আজ্ঞে।
—এখুনি একবার রাহাতুনপুর যেতি হচ্চে আপনাকে। বিলাতালি সর্দার আর ওসমান গনির মামলায় আপনি প্রধান সাক্ষী হবেন। সরেজমিন দেখে