পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 —ইউ থিংক ইট ইজ এ কেস্ অফ্ আর্সন?

 —আই কাণ্ট টেলি-ইয়াস এগো আই সি এ কেস্ লাইক দি্‌স, অ্যাণ্ড দ্যাট ওয়াজ এ কেস্ অফ আর্সন-মাই ডেওয়ান ওয়াজ রে্‌সপনসিবল ফর দ্যাট্-দি ডেভিল্।

 মাজিষ্ট্রেট সাহেব একশো টাকা মঞ্জুর করলেন সাহায্যের জন্য, বড় সাহেব দিলেন দুশো টাকা। সাহেবদের জয়জয়কার উঠলো গ্রামে।

 সকলে বললে-না, অমন বিচারক আর হবে না। হাজার প্রোক রাঙা মুখ।


 সেই রাত্রে কুইণ হলঘবে মস্ত নাচের আসার জমলে। রাঙামুখ সাহেবরা সবাই মদ খেয়েচে; মেমদের কোমর ধরে নাচচে, ইংরজি গান করচে। সহিস ভজা মুচি উর্দি পরে মদ পরিবেশন করচে। নীলকুঠিতে কোনো অবাঙালী চাকর বা খানসামা নেই। এই সব আশপাশের গ্রামেব মুচি, বাগদি, ভোম শ্রেণীর লোকেরা চাকর খানসামার কাজ করে। ফলে সাহেব মেম সকলেই বাংলা বলতে পারে, হিন্দি কেউ বলেও না জানেও না।

 আমীন প্রসন্ন চক্রবর্তী বার-দেউদিতে তাঁর ছোট কুঠুরিতে বসে তামাক টানছিলেন। সামনে বসেছিল বরদা বাগদিনী। বরদার বয়স প্রসন্ন চক্রবর্তীর চেয়ে বেশি, মাথার চুল শণের দড়ি। বরদাকে প্রসন্ন চক্রবর্তী মাঝে মাঝে স্মরণ করেন নিজের কাজ উদ্ধারের জন্য।

 প্রসন্ন বললেন-গয়া ভালো আছে?

 —তা একরকম আছে আপনাদের আশীব্বাদে।

 —বড় ভালো মেয়ে। এমন এ দিগরে দেখিনি। একটা কথা বরদা দিদি-

 —কি বলো-

 —এক বোতল লাল বিলিতি মাল গয়াকে বলে আনিয়ে দাও দিদি। আজ অনেক ভালো জিনিসের আমদানি হয়েচে। সায়েব সুয়োর রান্না, বুঝতেই পারচো। অনেক দিন ভালো জিনিস পেটে পড়েনি-

 —সে বাপু আমি কথা দিতে পারবো না। গয়া এখন ইদিকি নেই-

৪৪