বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একটা বড় মাছ।

 অক্রূর চুপ ক'রে দাঁড়িয়ে গেল। অত বড় মাছটা কি তার ছেলে পেয়েছে নাকি? বিশ্বাস তো হয় না। আজ হাট করবার পয়সাও তার হাতে নেই। যত কাছে আসে ওর ছেলে, তত ওর মুখ খুশিতে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ওঃ, মস্ত বড় মাছটা দেখচি।

 দূর থেকে ছেলে বললে-কনে যাচ্চ বাবা?

 —বাড়ি যাচ্ছিলাম। মাছ কাদের?

 —বাঁধালের মাছ। এখন পড়লো।

 —ওজন?

 –আট সের দশ ছটাক। তুমি মাছটা নিয়ে হাটে যাও।

 —তুমি কনে যাবি?

 —নৌকো বাঁওড়ের মুখে রেখে অ্যালাম যে ঝড় হলি উড়ে বেরিয়ে যাবে। তুমি যাও।

 নাল পালের দোকানে খদ্দেরের ভিড় আরম্ভ হবে সন্দে বেল। এই সময়টা সে পাঁচজনের সঙ্গে গল্পগুজব করে দিন কাটায়। অক্রুর জেলেকে দোকানের সবাই মিলে দাঁড় করালে। বেশ মাছটা। এত বড় মাছ অবেলায় ধরা পড়ল?

 নালু বললে-মাছটা আমাদের দিয়ে যাও অক্রুরদা—

 —নাও না। আমি বেঁচে যাই তা হ’লি। অবেলায় আর হাটে যাই নে।

 —দাম কি?

 —চার ট্যাঁকা দিও।

 —বুঝে-সুজে বল অক্রুরদা। অবিশ্যি অনেকদিন তুমি বড় মাছ বিক্রি করনি, দাম জানো না। হরি কাকা, দাম কত হতে পারে?

 হরি নাপিত ভালো করে মাছটা দেখে বললে—আমাদের উঠতি বয়েসে এ মাছের দাম হোত দেড় টাকা! দাও তিন টাকাতে দিয়ে যাও।

 —মাপ করো দাদা, পারবো না। বড় ঠকা হবে।

 —আচ্ছা, সাড়ে তিন টাকা পাবা। আর কথাটি বোলো। না, আজ

৫৯